রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮ অপরাহ্ন

‘ছেলের মৃত্যুর বদলা হিসেবে টাকা নিতে পারব না, ঐ টাকা গলা দিয়ে নামবে না’

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪, ১২.৩৫ পিএম
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

টিডিএস ডেস্ক॥

‘এসএসসি (দাখিল) পরীক্ষার পর ছেলেকে বলেছিলাম ব্যবসা করতে। কিন্তু ছেলে বলল, একটু পড়াশোনা করে দেখি। চলমান উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসএসি) পাঁচটি পরীক্ষাও দিয়েছিল। কিন্তু এরমধ্যেই ছেলে ফিরল লাশ হয়ে।’

কথাগুলো বলছিলেন গত ১৮ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর বহাদ্দারহাটে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষে নিহত তানভীর আহমেদের (১৯) বাবা বাদশা মিয়া।

মুঠোফোনে সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাদশা জানান, তার ছেলের মাথা ও পিঠে ছিল গুলির চিহ্ন।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালামাছছড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা বাদশা মিয়া ও সানোয়ারা বেগমের তিন ছেলের মধ্যে তানভীর ছিলেন সবার বড়।

তানভীরের বাবা বাদশা মিয়া মহেশখালীর চাষিদের কাছ থেকে পান কিনে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাকায় পান বিক্রি করেন।

বাদশা বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। সব সন্তানকে লেখাপড়া করানো সম্ভব নয়। এজন্য তানভীরকে বলেছিলাম পড়াশোনা বাদ দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে। কিন্তু ছেলে বলল পড়বে।’

তাই স্থানীয় ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী সংস্থা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করে ছেলেকে চট্টগ্রামের সরকারি আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজে শহরে ভর্তি করেন বাদশা।

তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর তিন দিন আগেও বিকাশে ছেলেকে খরচের জন্য দুই হাজার টাকা পাঠিয়েছিলাম।’

তানভীরের শোকে তার পুরো পরিবার স্তব্ধ। ছেলের মৃত্যুর পর থেকে মা সানোয়ারা বেগম অসুস্থ।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাদশা মিয়াও সেই আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন।

তবে ছেলের মৃত্যুর পর বাদশা কোনো সাহায্য-সহযোগিতা গ্রহণ করতে চাননি বলে সাক্ষাতে যাননি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমপি সাহেব বলেছিলেন ঢাকায় যেতে। আমি যেতে রাজি হইনি। ‘ছেলের মৃত্যুর পর এরজন্য টাকা নিতে পারব না। এই টাকা গলা দিয়ে নামবে না।’

ছেলেকে যারা এভাবে হত্যা করেছে, তার বিচার খোদাকে দিয়েছেন বলেও তিনি জানান। ‘জানাজার মাঠে আমি বলেছিলাম, কারও কাছে বিচার চাই না। খোদার কাছে বিচার দিয়েছি।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com