রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
আ’লীগ করার সুফল ১৫ বছরে অবৈধ সম্পদের পাহাড়॥ হেনরী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অবশেষে দুদকের ২ মামলা পরিবারের জিম্মায় মুক্ত হলেন সাংবাদিক মুন্নী সাহা যমুনা রেলওয়ে ব্রীজ: পরীক্ষামুলক ট্রেন চলাচল শুরু সিরাজগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটর সাইকেল আরোহী নিহত সিরাজগঞ্জ পৌর আ’লীগের সহ-সভাপতি ফিলিপস কারাগারে এস আলমের সঙ্গে আর ব্যবসায়ে আগ্রহী নয় ব্যাংকগুলো, বন্ধ হয়ে গেছে তেল-চিনি কারখানা ঠিকাদারের খোঁজ নেই, ছয় বছরেও শেষ হয়নি ২২ কোটির আইটি প্রকল্পের কাজ নভেম্বরে ১৩ শতাধিক সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয় কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি অবৈধ ছিল: হাইকোর্ট আগে সংস্কার, এরপর নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

আসছে বড় বাজেট নির্বাচনকে সামনে রেখে

  • আপডেট সময় বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮.৩৮ এএম
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

এফবিডি ডেস্ক॥

আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৭ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। চলতি অর্থবছরে বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে এর আকার পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ কমানো হতে পারে।

বৈশ্বিক সংকটের কারণে অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মধ্যেই আরেকটি বড় বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। মূলত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পরিকল্পনা সাজাতে বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও দেশের বর্তমান বাস্তবতা মাথায় রেখে আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একইসঙ্গে বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনসহ বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অর্থনীতির হালনাগাদ পরিস্থিতি ও চলতি অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেন বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা। তাদের বক্তব্যে অর্থনীতির বর্তমান চার চ্যালেঞ্জ উঠে এসেছে। তা হলো- উচ্চ মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার বিনিময় হারে অস্থিরতা, প্রবাসীদের পাঠানো আয় বা রেমিট্যান্স ও ভতুর্কির চাপ।

এসব চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখার লক্ষ্যকে সামনে রেখে সে অনুযায়ী আগামী অর্থবছরের বাজেটে পদক্ষেপ নিতে বলেন অর্থমন্ত্রী।

এ বছর মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে, যদিও বাস্তবে এই হার ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান কবে হবে তা কেউ বলতে পারছে না। ফলে আগামী বছরও উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রবণতা থাকবে। সে জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হচ্ছে।

আগামী বাজেটের সম্ভাব্য আকার নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজস্ব আয় প্রত্যাশিত মাত্রায় হচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় মানুষের বিশেষ করে নির্ধারিত আয়ের লোকদের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এতে করে কমে গেছে অভ্যন্তরীণ চাহিদাও। এ অবস্থায় আগামীতে সংকোচনমুখী বাজেট করা যেতে পারে।

সূত্র বলেছে, অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে আগামী বাজেটটি হবে এই সরকারের শেষ বাজেট। কাজেই আসন্ন বাজেটটি এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে নির্বাচনের প্রতিফলন থাকে। কারণ শেষ সময় নির্বাচনী আসনে উন্নয়ন কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ বেশি রাখার প্রস্তাব করেন তিনি।

বৈঠকের একটি সূত্র বলেছে, আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৭ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। চলতি অর্থবছরে বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে এর আকার পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ কমানো হতে পারে। আগামী এপ্রিলে সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত করা হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতির সংকট সহসা যাচ্ছে না। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে সার ও জ্বালানি তেলের দাম খুব একটা কমবে না। এতে করে দেশে এই দুটি পণ্যে ভতুর্কির চাহিদা বাড়বে। এছাড়া বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ায় এ খাতেও ভতুর্কি বাড়ছে। সব মিলে আগামী অর্থবছরও ভতুর্কির চাপ অব্যাহত থাকছে।

চলতি অর্থবছরে মোট ৮৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয় ভতুর্কি খাতে। সূত্র বলেছে, আগামী বছরে এটি এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

বড় বাজেট করার প্রস্তাব করা হলেও আগামী বাজেটে ঘাটতি চলতি বছরের মতোই ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হচ্ছে।

তবে অর্থমন্ত্রীর প্রত্যাশা, আগামী বছর নাগাদ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে গতি ফিরবে। যে কারণে আগামী বছরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার চলতি অর্থবছরের মতো সাড়ে ৭ শতাংশ প্রাক্কলনের কথা বলেছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের মতো আগামী বছরও মূল্যস্ফীতি উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ফলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাই হবে নতুন অর্থবছরের প্রধান চ্যালেঞ্জ।’

যোগাযোগ করা হলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘এবার যুদ্ধাবস্থার মধ্য দিয়ে নতুন বাজেট করতে হচ্ছে। যুদ্ধ সব দেশকেই কম-বেশি প্রভাবিত করেছে। সব দেশেই মূল্যস্ফীতি এক নম্বর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। কাজেই আমি মনে করি আগামী অর্থবছরের বাজেটের মূল লক্ষ্যই হওয়া উচিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। জিডিপির প্রবৃদ্ধি যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ প্রবৃদ্ধি কমলে কর্মসংস্থানে বিরূপ প্রভাব পড়বে।’

যুক্তিসঙ্গত ভারসাম্য রেখে নতুন বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আবার ব্যয়ও কমানো যাবে না। এসব বিবেচেনা করে কৌশলপূর্ণ একটি বাজেট করতে হবে।’

 

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com