এফবিডি ডেস্ক॥
রাজস্ব আদায় বাড়াতে মূল্য সংযোজন কর বা মূসক আদায় যন্ত্র ইলেকট্রনিকস ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বাড়ানোর জোর দিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য ভ্যাট সপ্তাহ ও জাতীয় ভ্যাট দিবসকে সামনে রেখে ভ্যাট কমিশনারেটগুলোতে বিশেষ সার্ভে করা হচ্ছে। এদিকে ১২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতা পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর।
সোমবার বেলা ১১টায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে ইএফডিএমএস থেকে ইস্যুকৃত চালানের ওপর ২৩তম ড্র অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি সদস্য ড. মইনুল খান।
তিনি জানান, ইএফডি মেশিনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ৬ শতাংশ বাড়লেও চালান ইস্যু কমেছে ১ শতাংশ। গত অক্টোবরে ইএফডি থেকে ৩০ কোটি ৪০ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় হলেও নভেম্বরে ৩২ কোটি ২৯ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে।
রাজস্বের পরিমাণ কিঞ্চিত বাড়লেও তা সন্তোষজনক নয়। এ জন্য ইএফডির আরও বেশি প্রচার দরকার বলে জানিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ড. মইনুল খান বলেন, ভ্যাট সপ্তাহ ও জাতীয় ভ্যাট দিবসকে সামনে রেখে ভ্যাট কমিশনারেটগুলোতে বিশেষ জরিপ করতে ভ্যাট কমিশনারেটগুলোতে বিশেষ সার্ভে করছে। তারা ভ্যাটযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো খুঁজে বের করবে। কমিশনারেটগুলো নিশ্চিত করবে তাদের আওতাধীন ভ্যাট আদায় করার মতো প্রতিষ্ঠান নেই।
নভেম্বরের ১ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত চালানের ওপর ভিত্তি করে এই লটারির ড্র অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। যেখানে মোট ১০১ জন বিজয়ীর চালান নম্বর ঘোষণা করা হয়। এবারের ইএফডিতে ১ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন চট্টগ্রাম থেকে।
মইনুল খান বলেন, ‘চলতি মাস পর্যন্ত ৮ হাজার ৮৩০ মেশিন বসানো হয়েছে। আমাদের তিন লাখ ইএফডি মেশিন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ভ্যাট লটারির প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও জোরদার করা হচ্ছে। লটারির আওতা বাড়ানোর চিন্তা করছি। অ্যাপসের মাধ্যমে লটারির পুরস্কার দেওয়া যায় কি না ভেবে দেখছি।’
এদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ভ্যাট পরিশোধকারী হিসেবে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে ১২৯ প্রতিষ্ঠানকে। ভ্যাট প্রদানে উৎসাহ দিতে প্রতি বছর সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দিয়ে আসছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরই ধারাবহিকতায় তাদের মনোনীত করা হয়েছে।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে তিন ক্যাটাগরিতে ৯টি ও জেলা পর্যায়ে তিন ক্যাটাগরিতে ১২০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সম্প্রতি এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (মূসক-প্রশিক্ষণ ও পুরস্কার) মো. ফয়সাল বিন রহমান সই করা প্রজ্ঞাপনে প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম জানানো হয়। ‘সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর পরিশোধকারী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান নীতিমালা, ২০০৫ (সংশোধিত’ অনুযায়ী এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর জাতীয় মূসক দিবসের অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার দেওয়া হবে বলে এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে জাতীয় পর্যায়ে উৎপাদন, ব্যবসা ও সেবা খাতে সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) পরিশোধকারী ৯ প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদন খাতের ৩টি প্রতিষ্ঠান হলো অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এবং এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড।
ব্যবসায় খাতের ৩ প্রতিষ্ঠান হলো- ওয়ালটন প্লাজা, আগোরা লিমিটেড ও ইউনিমার্ট লিমিটেড।
সেবা খাতের তিন প্রতিষ্ঠান হলো- বিকাশ লিমিটেড, নগদ লিমিটেড এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড বা আইএফআইসি ব্যাংক।
নীতিমালা অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে জেলা পর্যায়ে উৎপাদন, ব্যবসা ও সেবা খাতে সর্বোচ্চ মূসক পরিশোধকারী হিসেবে ১২০ প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করা হয়েছে পুরস্কারের জন্য।
এর মধ্যে রয়েছে এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, হ্যামকো করপোরেশন লিমিটেড ও ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।