স্পোর্টস ডেস্ক॥
ফিফা র্যাংকিংয়েও বাংলাদেশের চেয়ে ঢের এগিয়ে নেপাল। দুই দলের অতীত পরিসংখ্যানও নেপালের পক্ষেই পালে হাওয়া দিচ্ছিল। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে বাজিমাত করলো বাংলাদেশই। হিসাবের গণেশ উল্টে দিয়ে হিমালয় জয় করলো সাবিনা খাতুনের দল। স্বাগতিকদের স্রেফ উড়িয়ে দিলো ৩-১ গোলে। এমন জয়ে বহুদিন পর উল্লাসের উপলক্ষ সামনে এলো দেশের কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর সামনে।
তাইতো বিজয়ী নারীদেরও দেশের মাটিতে সংবর্ধনায় সিক্ত করতে চান ভক্ত-সমর্থকরা। আপাতত চলছে সে আয়োজনই। সদ্য সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী নারী ফুটবলাররা আগামী বুধবার দুপুরে দেশে ফিরছেন। তাদের সংবর্ধনায় প্রস্তুত হচ্ছে ছাদখোলা বাস।
তিনবার সেমিফাইনাল ও একবার ফাইনাল হারের পর অধরা শিরোপার দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৯ বছর পর দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট নিজেদের করে নিয়েছে লাল-সবুজের দল। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়ী হয়েছিল বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দল। এবার অতীতের সেই গৌরব ফিরিয়ে আনলো বাংলার বাঘিনীরা।
সোমবার কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ।
ইতিহাসগড়া এই নারীরা বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরবে বুধবার। এদিন স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া ১২টায় নেপাল থেকে ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানী, সিরাত জাহান স্বপ্নারা। এক ঘণ্টার ফ্লাইট শেষে দুপুর সোয়া ১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে তাদের।
প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জেতার পরই নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা দেওয়ার দাবি ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিভিন্ন মহল থেকেও এ দাবি আসে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চ্যাম্পিয়ন নারীদের বিমানবন্দর থেকে ছাদখোলা বাসে করে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
বিআরটিসি জানায়, ৭৫ সিটের ডাবল ডেকার বাসের দুইতলায় ৮ থেকে ১০টি সিট তুলে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি বিআরটিসির মতিঝিল ডিপোর একটি ডাবল ডেকার বাসের ছাদ কাটা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাসের গায়েও বিজয়ীদের স্টিকার লাগানো থাকবে। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার মধ্যেই ছাদখোলা বাসটি প্রস্তুত হবে।
মতিঝিল বাস ডিপোর ম্যানেজার মো. মাসুদ তালুকদার জানিয়েছেন, বাসটি প্রস্তুত হচ্ছে। ডাবল ডেকার বাসের ছাদ কেটে ফেলাসহ ৮ থেকে ১০টি সিট খুলে ফেলা হয়েছে। এটা ৭৫ সিটের বাস। শুধু দুইতলার আসনগুলো খুলে ফেলা হয়েছে। আশা করি রাত ৮টার মধ্যেই বাসটি প্রস্তুত হবে।
নেপালের বিপক্ষে ফাইনালে স্মরণীয় জয়ে শামসুন্নাহার প্রথম গোলটি করেন। পরের দুটি গোল আসে কৃষ্ণা রানী সরকারের পা থেকে। নেপালের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন অনিতা বাসনেত।
সোমবারের ফাইনাল ম্যাচের আগে দুই দলের আটবারের দেখায় ছয়বার জয় নেপালের। দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল। ফলে ইতিহাসগড়া এই জয়ে নেপালবধের অপেক্ষা যেমন ঘুচলো অধরা শিরোপাও এলো ঘরে।