ডেস্ক রিপোর্ট॥
ইসরায়েলে গত ১৩ এপ্রিল নজিরবিহীন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এই হামলার জবাব দিতে বদ্ধপরিকর ইসরায়েলও। এ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে দেখা দিয়েছে নতুন সংকট।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়লে, কিংবা সংকট দীর্ঘায়িত হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারে। এতে আমদানি ও রফতানিতে পরিবহন খরচের সঙ্গে দেশেও বাড়বে পণ্যের উৎপাদন খরচ। অর্থনীতিতে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে সম্ভাবনাময় মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে রফতানিও কমবে।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলায় বেশ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়। যার জেরে ১৩ এপ্রিল ইসরাইলে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা করে ইরান।
দুই দেশের এই উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়লে জ্বালানি তেলের সরবরাহ সংকট ও দাম বৃদ্ধির শঙ্কা দেখছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টাকে বিলম্বিত করতে পারে। এর প্রভাবে জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বাড়লে, মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।
গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ বলেন, যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয় বা যদি আঞ্চলিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রথমেই জ্বালানির মার্কেট বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য যে জ্বালানি সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ পেট্রোলিয়াম, সেই জায়গায়য় সবচেয়ে বড় ডিজরাপশন হবে। এটার একটা ডিভাস্টেটিং ইমপ্যাক্ট আমাদের মধ্যে পড়বে। টাইমিং আরো ব্যাড। আমরা এখনো ম্যাকরো ইনফ্লেশন, পেমেন্ট প্রেসারকে ফাইট করে এটা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি।
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাবে লোহিত সাগরে জাহাজে হুতি বিদ্রোহীদের হামলা বেড়েছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের জেরে সসস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। এতে হরমুজ প্রণালীতে জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হলে বিকল্প জলপথে আমদানি-রফতানির খরচ বাড়বে বলে মত ব্যবসায়ীদের।
বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আমাদের খরচ কিন্তু বেড়ে যাবে। অনেকদিন ধরে আমরা একটা নতুন বাজার ক্রিয়েট করলাম, সেই বাজারটা কিন্তু আমাদের স্টপ হয়ে যাচ্ছে। মানুষের কেনাবেচার জায়গাটা কিন্তু স্টপ হয়ে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের বাজারটা আমাদের জন্য আশার আলো জাগিয়েছিল।
কাতার, সৌদি আরব, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের বড় শ্রমবাজার। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধের মত সংকটে জনশক্তি রফতানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি কমতে পারে প্রবাসীদের আয়।