শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ১২:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
হত্যা মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি হেনরী সংস্কারের নামে নির্বাচন বন্ধ রাখার অর্থই হয় না: টুকু সিরাজগঞ্জে অবৈধভাবে শিশু খাদ্য উৎপাদন কারখানাটি সিলগালা সিরাজগঞ্জে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিচারের দাবি উল্লাপাড়ায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি,জমি ও পুকুর দখলের অভিযোগ: প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রায়গঞ্জে চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান কচ্ছপ গতিতে চলছে এলেঙ্গা-রংপুর চারলেন ও হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ প্রকল্পের কাজ: বর্ধিত মেয়াদেও কাটছেনা অনিশ্চয়তা এনায়েতপুরে সড়ক সংস্কারে দাবিতে এলাকাবাসীর  মানববন্ধন যারা আ. লীগের সঙ্গে আঁতাত করছে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না : টুকু সাবেক এমপি আজিজের বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন

কচ্ছপ গতিতে চলছে এলেঙ্গা-রংপুর চারলেন ও হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ প্রকল্পের কাজ: বর্ধিত মেয়াদেও কাটছেনা অনিশ্চয়তা

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৫.৪৫ পিএম

সিরাজুল ইসলাম শিশির॥



কাজের গতি কম থাকাসহ নানা কারণে ১৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলেঙ্গা-রংপুর চারলেন সড়কের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে কাজের মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়। একই অবস্থা সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ প্রকল্পের। রাজধানী থেকে উত্তরাঞ্চলগামী ব্যস্ততম এই সড়কের কাজ ধীর গতিতে চলায় বিভিন্ন জায়গায় যানজট দেখা দিচ্ছে। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে গাড়ির চালকের পাশাপাশি এই পথের যাত্রীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে যান চলাচলে সময় ও ব্যয় উভয়ই বেড়েছে। নির্মাণ কাজ চলার কারণে বেশ কিছু স্থানে মূল লেনের পরিবর্তে পাশের লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কাজের শুরু থেকেই প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর অব্যবস্থাপনা, ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনা, প্রকল্প কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকির অভাব এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বারবার প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে।

যদিও হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ এবং সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-২) এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান রাসেল দাবি করছেন, ইন্টারচেঞ্জ প্রকল্পের কাজ ৫২ শতাংশ এবং সাসেক-২ চারলেন প্রকল্পের কাজ ৮২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে চলমান এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর চারলেন সড়ক এবং হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ উভয় প্রকল্পই সাসেক-২ এর অংশ। যদি নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করা যায় তাহলে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর চারলেন এবং হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ও যোগাযোগ উন্নয়নের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার চার লেনের মহাসড়কের নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল। শুরু থেকে ৯ বছরে প্রকল্পের ব্যয় কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ সময়সীমা ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

প্রকল্পটির প্রাথমিক বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। মেয়াদ ছিল ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত। তবে কাজ শুরু করতে বিলম্ব এবং কোভিড-১৯ মহামারীর সঙ্গে সঙ্গে জমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে ২০১৯ সালে আনা প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পের সময়সীমা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর পাশাপাশি প্রকল্পের বরাদ্দ ১৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু সেই সূচি অনুযায়ী কাজ শেষ না হওয়ায় ২০২৩ সালে দ্বিতীয় সংশোধনী আনা হয়। তখন সময়সীমা আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। পাশাপাশি বরাদ্দও ১৮ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকায় উন্নীত হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের সময়, খরচ ও বরাদ্দ বাড়ানোর পেছনে জমির শ্রেণি পরিবর্তন এবং বিভিন্ন স্থানে অধিগ্রহণের জটিলতার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। এর সঙ্গে ফ্লাইওভার, সেতু, আন্ডারপাস, সার্ভিস লেন, ইন্টারচেঞ্জ (হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ), যাত্রী আশ্রয়কেন্দ্র, বৃক্ষরোপণ এবং আলোকসজ্জাসহ অতিরিক্ত কাজও যুক্ত করা হয়েছে।

প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল মোড়, সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ভূঁইয়াঘাতী, বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার ছোনকা, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এবং রংপুর জেলার পলাশবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ কাজ এখনো অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। এ ছাড়াও, এলেঙ্গা মোড় থেকে যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত বেশ কিছু কাজ এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে।

এদিকে হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জের নির্মাণ প্রকল্পটির কাজ ২০২২ সালে শুরু হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু প্রকল্প কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, জমি অধিগ্রহণে জটিলতার কারণে প্রায় দেড় বছর নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে ৭৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জের কাজের সময়কাল ২০২৬ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে প্রকল্পের ব্যয়ও কিছুটা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ এবং সাসেক-২ এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান রাসেল বলেন, ‘বিভিন্ন সমস্যার কারণে প্রকল্পের কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণ এবং জমির মালিকদের অর্থ পরিশোধ ছিল প্রধান কারণ। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই ১৬ মাস সময় লেগেছে। আশা করছি আমরা দ্রুত কাজটি সমাপ্ত করতে পারব।

এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর চারলেন মহাসড়ক উন্নীতকরণ প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এবং সাসেক-২-এর প্রকল্প পরিচালক ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘যেকোনো নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর কাজ শুরু করতে একটু বেশি সময় লাগে। আমরা আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারব।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com