রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন

করোনা থেকে বাঁচার উপায়

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১১.৩৮ এএম
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

সারা বিশ্ব যখন করোনার মতো কঠিন এক মহামারীতে অস্বচ্ছ। মৃত্যুর ভয়ে মানুষ প্রকম্পিত হচ্ছে নিত্যদিন। প্রতিদিন দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে চলছে লাশের বাহারি আয়োজন। এই জীবন মৃত্যুর খেলায় ইতিপূর্বে পৃথিবী কখনো মগ্ন হয়নি। কেন এমনটি হচ্ছে? সমগ্র পৃথিবীতে একই সাথে এত মানুষের চিৎকার ধ্বনি আগে কখনো কানে ভেসে আসেনি। পৃথিবীর কোনো স্থানে শোনা যাচ্ছে না-মহামারী থেকে পরিত্রাণের হর্ষের গান, আমাদের দেশ করোনামুক্ত হলো। শোনা যাচ্ছে না-কারো মুখে হর্ষধ্বনি। চারিদিকে দুখের জোয়ারে ভাসছে সমগ্র বিশ্ব।

দিন দিন করোনা তার রূপ বদলাচ্ছে। বাস্তবিকপক্ষে এখনো গবেষকগণ-এর ওষুধ-প্রতিষেধক বের করতে সক্ষম হননি। পৃথিবীর বুকে আদৌ পর্যন্ত অসম্ভব বলতে কোনো কাজ নেই। তবে এখানে এসে বিজ্ঞান হোঁচট খাচ্ছে কেনো। কঠিন থেকে কঠিন রোগের ওষুধ ইতিপূর্বে আবিষ্কার হয়েছে। তবে এটা হচ্ছে না কেনো। অথচ আল্লাহতায়ালা পৃথিবীতে রোগ পাঠানোর আগে আরোগ্য পাঠান। সেই আরোগ্য মানুষ এখনও খুঁজে পাচ্ছে না কেন?

করোনার কথা শুনলেই সবার ভেতরে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। আবার যখন শোনা যায়- অমুক অমুক দেশে আজ ধারণাতীত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এসব শুনে খুব কম সংখ্যক মানুষ ঠিক থাকতে পারে। এই করোনা তো মানুষের বানানো কৃত্রিম নয়। এটা সৃষ্টিকর্তার ইশারায় এই ভূপৃষ্ঠে সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে চলুন আমরা সবাই মিলে প্রভুর কাছে অনুনয় বিনয়ের সাথে প্রার্থনা করি, তিনি যেনো আরোপিত মহামারী আমাদের ওপর থেকে সরিয়ে নেন। সুন্দর পৃথিবী পেতে হলে অনেক বেশি স্মরণ করতে হবে আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে। আমরা আজ করোনা থেকে মুক্তির আসল চাবিকাঠি যথাস্থানে প্রয়োগ করতে পারছি না। চাবি কিন্তু আমাদের হাতেই আছে শুধুমাত্র প্রয়োগটাই বাকি। আমরা আজ অনেক গাফেল হয়ে পড়েছি। নফসের আনুগত্যের মাঝে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ছি। কথা ছিলো আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্যের মাঝে এ যাপিত জীবনকে যাপন করা। আমাদের পাপের কারণে আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে মহামারী নামক করোনা। পবিত্র কোরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে- ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা আররুম, আয়াত-৪১)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর এবং ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন কোনো সমপ্রদায়ের মধ্যে বেহায়াপনা এবং অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী দেখা দেয়। (ইবনে মাজাহ) আম্মাজান হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার  রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! বিপদ কখন আসে? প্রতিত্তুরে নবীজি বলেন যখন মানুষের মধ্যে নেশাদ্রব্যের ব্যবহার বেড়ে যায় এবং মানুষ প্রকাশ্যে জিনায় লিপ্ত হয়। তখন জমিনে নানা রকম বিপর্যয় দেখা দেয়। ‘আর সেই বিপর্যয় কখনো আসমান থেকে আল্লাহ জমিনে পাঠান। আবার কখনো জমিন থেকে উৎপন্ন হয়। আসমান থেকে যে বিপর্যয় আসে তা হচ্ছে কখনো প্রবল বৃষ্টির দ্বারা, আবার কখনো শিলা বৃষ্টির দ্বারা, আবার কখনো কঠিন বজ্রধ্বনি দ্বারা ইত্যাদি। আর জমিন থেকে যে  বিপর্যয় সৃষ্টি হয় তা হচ্ছে তথা কখনো বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের মাধ্যমে আবার কখনো হারিকেন কিংবা করোনা দ্বারা আবার কখনো ভূমিকম্পের দ্বারাও হতে পারে। উল্লেখিত সবগুলো হলো খোদায়ী গজব। এই গজব থেকে বাঁচার উপায় তাওবার মাধ্যমে। নিজগুনাহ থেকে বেশি থেকে বেশি পরিমাণে তাওবা করা। নতুবা একের পর এক আজাব গজব আসতেই পারে। আসুন আমরা সবাই নিজেদের বিবেক জাগিয়ে অনুতপ্ত হই আমাদের প্রভুর নিকট। তিনি যেনো আমাদের ওপর থেকে করোনানামক এই ভয়ঙ্কর মহামারী উঠিয়ে নেন। একমাত্র আল্লাহতায়ালাই পারেন এই মহামারী করোনা থেকে বাঁচাতে আমাদেরকে। তিনিই সর্বশক্তিমান।

লেখক :মাওলানা শামসুল আরেফীন

আলেম, প্রাবন্ধিক

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com