কক্সবাজার অফিস
কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটের পর্যটকবাহী জাহাজ যাত্রীদের নিয়ে গভীর সমুদ্রে আটকে ছিল টানা ১১ ঘণ্টা। মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন থেকে রওনা করে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে এটির পৌঁছানোর কথা ছিল সন্ধ্যা ৫টার দিকে। কিন্তু চরম ভোগান্তির পর যাত্রীরা ঘাটে পৌঁছেন বুধবার ভোর ৪টার দিকে।
উত্তাল সাগরে আটকে থাকার সময়জুড়ে যাত্রীরা ছিলেন আতঙ্কে। তাদের অভিযোগ, জাহাজ কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা আর অসহযোগিতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। খাবার সংকটে শিশু ও বয়স্করা ছিল চরম ভোগান্তিতে। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে অনেকে বসার জায়গাও পায়নি।
তবে ভিন্ন কথা বলেছে জাহাজ কর্তৃপক্ষ। জাহাজটির কক্সবাজার কার্যালয়ের ইনচার্জ হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে জাহাজটি ঘাটে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাগরে জাহাজটির নোঙর করতে হয়। এর মধ্যে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে রওনা করে ‘বার আউলিয়া’ নামের অন্য একটি জাহাজ। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় যাত্রীদের ওই জাহাজে তুলে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এতে অনেক সময় কেটে যায়। পরে ওই জাহাজে করে তাদের ঘাটের দিকে পাঠানো হয়।
খাবার সংকট, অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। জানান, জাহাজে ১১০০ যাত্রী ছিল। যেখানে খাবার মজুদ ছিল কমপক্ষে ৪ হাজার জনের।
অব্যবস্থাপনার বিষয়টি সঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি জানান, তারা কক্সবাজার থেকে নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করছেন কর্ণফুলী জাহাজে। এটি সাময়িক ত্রুটির কারণে বন্ধ ছিল। এখন স্বাভাবিক। আর কোনো অসুবিধা হবে না।
বুধবার ভোরে ঘাটে ফেরা যাত্রীদের মধ্যে আফরোজা বেগম জানান, জাহাজটি পরিচালনায় ছিলেন অদক্ষ নাবিক। যেখানে জাহাজ কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা আর অসহযোগিতা ছিল। জাহাজের মাত্র ১৫ শতাংশ যাত্রীকে খাবার দেওয়া হয়েছে। অন্যরা খাবার পাননি।
রফিকুল নামে এক যাত্রী জানান, সমুদ্র উত্তাল ছিল। বারবার বলার পরও কর্তৃপক্ষ লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করেনি। সেই সঙ্গে তিনটি আলুর সিঙাড়ার দাম রাখা হয়েছে ১০০ টাকা, খিচুড়ির দাম রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বশীল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাকে পরিচয় জানিয়ে এসএমএস করা হলেও সাড়া দেননি।