গাজার অর্ধেকের বেশি মানুষ এখন দক্ষিণের শহর রাফাহ-য় আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় শনিবার রাতভর ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৯২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রোববার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, শনিবার রাতে ইসরায়েলি বাহিনী যেসব জায়গায় বোমা ফেলেছে তার মধ্যে মিশর সীমান্তবর্তী রাফাহ শহরের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলও রয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে গাজার নানা প্রান্ত থেকে আসা অনেক মানুষ ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
গাজার উত্তরাঞ্চলের অনেকাংশই এখন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। তাদের পদাতিক বাহিনী মধ্যাঞ্চল হয়ে এখন গাজার দক্ষিণাংশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দক্ষিণের সর্ববৃহৎ নগরী খান ইউনিস ঘিরে তীব্র লড়াই চলছে। এ অবস্থায় প্রাণ বাঁচাতে লাখ লাখ মানুষ রাফাহ-য় আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানেও নিয়মিত আকাশ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
যুদ্ধ শুরুর আগে রাফাহ-য় প্রায় দুই লাখ মানুষ বসবাস করতো। এখন গাজার অর্ধেকের বেশি মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএ-র একজন প্রতিনিধি রাফাহ কে ‘হাতাশার প্রেসার কুকার’ বলে বর্ণনা করে পরবর্তীতে ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটিতে কী ঘটতে চলেছে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনী এক সময় ‘রাফাহতেও পৌঁছে যাবে’ বলে গত বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গালান্ত।
রাফাহ তে পালিয়ে আসা মাহমুদ আবু আল-শার কাতর কণ্ঠে বলেন, “আমরা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছি। দয়া করে একটি যুদ্ধবিরতিতে আসুন। যেন আমরা নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারি।”
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয় গত সপ্তাহে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একটি চুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ওই চুক্তির একটি খসড়া হামাস নেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার লেবাননে এক সংবাদ সম্মেলনে হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা ওসামা হামদান বলেন, গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি।
তিনি বলেন, “ইসরায়েল, কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের প্রস্তাবিত চুক্তিকাঠামোটি পর্যালোচনা করছেন হামাসের নেতারা। এ বিষয়ে হামাসের অবস্থান ঘোষণার জন্য আরও সময় দরকার।”
গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু।