বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
আ’লীগ করার সুফল ১৫ বছরে অবৈধ সম্পদের পাহাড়॥ হেনরী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অবশেষে দুদকের ২ মামলা পরিবারের জিম্মায় মুক্ত হলেন সাংবাদিক মুন্নী সাহা যমুনা রেলওয়ে ব্রীজ: পরীক্ষামুলক ট্রেন চলাচল শুরু সিরাজগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটর সাইকেল আরোহী নিহত সিরাজগঞ্জ পৌর আ’লীগের সহ-সভাপতি ফিলিপস কারাগারে এস আলমের সঙ্গে আর ব্যবসায়ে আগ্রহী নয় ব্যাংকগুলো, বন্ধ হয়ে গেছে তেল-চিনি কারখানা ঠিকাদারের খোঁজ নেই, ছয় বছরেও শেষ হয়নি ২২ কোটির আইটি প্রকল্পের কাজ নভেম্বরে ১৩ শতাধিক সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয় কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি অবৈধ ছিল: হাইকোর্ট আগে সংস্কার, এরপর নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

গাজা যুদ্ধের ৬ মাস: হামাস নির্মূলে কতটা সফল ইসরায়েল?

  • আপডেট সময় রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১২.০০ পিএম
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগ্রহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক॥

গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার শিকার হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র এই সংগঠনটিকে ‘গুঁড়িয়ে দেওয়ার এবং নিশ্চিহ্ন করে ফেলার’ প্রতিজ্ঞা নিয়ে গাজার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েল। যাতে হামাস আর কোনো দিন দেশটির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে না পারে।

গাজায় ইসরায়েলের সেই অভিযানের ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। এ ছয় মাসে ৩৩ হাজারের বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।  গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের সবাই বাস্তুচ্যুত, অনাহারে দিন কাটাচ্ছে এবং ছোট্ট এই ভূখণ্ডটিতে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।

এদিকে চলমান এ হামলায় সব দিক থেকেই চাপের মুখে রয়েছে নেতানিয়াহু সরকার। তবে এটা পরিষ্কার যে, হামাসকে নির্মূলে সফল হয়নি ইসরায়েল। কীভাবে যুদ্ধ শেষ হবে বা পরবর্তী সময়ে কী করতে হবে– তা নিয়েও ইসরায়েলের কোনো দৃশ্যমান পরিকল্পনা নেই।

গত শনিবার এক দিনে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরো ৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬৫ জন। ছয় মাসে মোট ৩৩ হাজার ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ। এ অবস্থায় একটি যুদ্ধবিরতির দিকে রয়েছে পুরো বিশ্ব।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) বিবৃতিতে দাবি করা হয়, হাজারো হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। গাজার তলদেশে সুড়ঙ্গের বিশাল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা হয়েছে, যা হামাস হামলা চালাতে ব্যবহার করতো। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৩ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। এই সংখ্যাটি কীভাবে গণনা করেছে তা জানানো হয়নি। যদিও ইসরায়েল প্রতিটা হামাস নেতাকে হত্যার পর তাদের পরিচয় প্রকাশ করে।

গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১১৩ জনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়। তাদের অধিকাংশেই যুদ্ধের প্রথম তিন মাসে নিহত হয়। এ বছরের ২৬ মার্চ হামাসের সামরিক শাখার ডেপুটি কমান্ডার মারওয়ান ইসাকে হত্যার কথা জানায় আইডিএফ। তিনি মোস্ট ওয়ান্টেডদের মধ্যে একজন ছিলেন। তবে হামাস এ তথ্য নিশ্চিত করেনি।

অপর দিকে ইসরায়েলের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২৫৩ জনকে গাজায় জিম্মি করা হয়েছিল। এদের মধ্যে ১০৯ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সামরিক অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে ৩ জনকে। ১২ জিম্মির মরদেহ  উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন নিজেদের ভুল অপারেশনে হত্যা করা হয়। বাকি ১২৯ জন জিম্মির মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে বলে ধারণা করছে ইসরায়েল। তবে হামাস বলছে, মৃত জিম্মির সংখ্যা আরও বেশি। আর হামলার ফলে নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ছাড়া আর কোনো কিছু অর্জন করেনি ইসরায়েল।

গত শনিবার সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় ভয়ানক মানবিক সংকট সত্ত্বেও অব্যাহতভাবে হামাসকে তাড়া করা বৈশ্বিক পর্যায়ে ইসরায়েলকে একঘরে করে দিয়েছে। ইসরায়েলের বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার সব দিক থেকেই চাপের মুখে রয়েছে। বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েল যা করেছে, তা গণহত্যা বলে গণ্য হতে পারে। ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলোও এখন নেতানিয়াহু সরকারের সমালোচনা করছে। ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ না করতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ওপর চাপ বাড়ছে।

এদিকে হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে আজ রোববার মিসরের কায়রোতে তারা একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে।

গাজায় ইসরায়েলের হামলার ছয় মাসে ১৯৬ জন ত্রাণকর্মী নিহত হন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের কাছ জানতে চান, তাদের কেন হত্যা করা হয়েছে। অবরুদ্ধ উপত্যকার পরিস্থিতি একেবারেই খারাপ। তাঁর প্রত্যাশা, ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহে বাধা দেবে না। গত সপ্তাহে তিনটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে বিদেশি সাত কর্মীকে হত্যা করে ইসরায়েল। নিহতদের মধ্যে তিনজন ব্রিটিশ, একজন পোলিস, একজন অস্ট্রেলীয়, একজন মার্কিনি ও একজন ফিলিস্তিনি রয়েছেন। এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় তোলে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফোন করে নেতানিয়াহুকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুমকি দেন।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রতি ঘণ্টায় মারা যাচ্ছে প্রায় চার শিশু। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১৪ হাজার ৩৫০ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। যা মোট নিহতের প্রায় ৪৪ ভাগ।

গত শুক্রবার ফিলিস্তিনের বার্ষিক শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে ফিলিস্তিন কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুসারে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রতি ঘণ্টায় প্রায় চার শিশু মারা যায়। নিখোঁজদের মোট সংখ্যার অন্তত ৭০ ভাগ নারী এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৭ হাজার। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ১১৭ জন শিশু নিহত এবং ৭২৪ জন আহত হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com