অনলাইন ডেস্ক॥
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের নগরী বাল্টিমোরে পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় সেতু ধসের ঘটনায় নিখোঁজ ছয় ব্যক্তির খোঁজে চলা তল্লাশি অভিযান বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে কোস্ট গার্ড। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা ধারণা করছেন, ওই ছয় জন হয়তো আর বেঁচে নেই।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার প্রথম প্রহরের দিকে একটি কন্টেইনারবাহী জাহাজের ধাক্কায় বাল্টিমোরের ঐতিহাসিক ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজের একাংশ ধসে পড়ে। আড়াই কিলোমিটারের বেশি লম্বা সেতুটির পিলারে কন্টেইনারবাহী জাহাজটি ধাক্কা মেরেছিল।
কর্মকর্তারা জানান, জাহাজটিতে ‘বৈদ্যুতিক গোলযোগ’ দেখা দিয়েছিল এবং সেতুর সঙ্গে সংঘর্ষের কয়েক মুহূর্ত আগে সেটি সহায়তা চেয়ে জরুরি বার্তা পাঠিয়েছিল।
সেতুটি ধসের পরপরই সেটি থেকে ‘অন্তত সাত জন’ পানিতে পড়ে গেছে বলে জানানো হয়। তাদের খোঁজে বেশ কয়েকটি নৌযান ও হেলিকপ্টার নিয়ে মার্কিন কোস্ট গার্ড নিচের প্যাটাপসকো নদীতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্রে জাহাজের ধাক্কায় ধসে পড়েছে সেতু
পরে তারা জানায়, পানি থেকে তারা দুইজনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি অন্তত ছয়জন নিখোঁজ রয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা রিয়ার অ্যাডমিরাল শ্যানন গিলরথ বলেন, বাকি নিখোঁজ ব্যক্তিরা খুব সম্ভবত মারা গেছেন।
“তারা যে নদীতে পড়ে গেছেন সেটির পানির তাপমাত্রা এবং যতটা লম্বা সময় ধরে তারা পানির নিচে আছেন তার ভিত্তিতে এই ধারণা করা হচ্ছে।”
সেতু ধসের সময় পানিতে পড়ে যাওয়া ব্যক্তিরা সবাই নির্মাণ শ্রমিক এবং ঘটনার সময় তারা সেতুটির গর্ত মেরামতের কাজ করছিলেন।
৪৭ বছর পুরানো সেতুটির সঙ্গে যে জাহাজের সংঘর্ষ হয় সেটি সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী জাহাজ দ্য ডালি। পোর্ট ব্রিজ থেকে সেটি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ০০:৪৫টার দিকে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল।
একটি ইউএস ফেডারেল গভার্নমেন্ট এজেন্সি জানায়, পোর্ট ব্রিজ বন্দর ছাড়ার পর জাহাজটি ‘নিয়ন্ত্রণ’ হারিয়ে ফেলে। যে কারণে জাহাজের নাবিকরা ম্যারিল্যান্ড ট্রান্সপোর্ট কর্মকর্তাদের একটি জরুরি বার্তা পাঠিয়ে সম্ভাব্য সংঘর্ষের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
ম্যারিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মোরে এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “জাহাজটির নাবিকরা কর্তৃপক্ষকে সেটিতে বৈদ্যুতিক গোলযোগ দেখা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। সেতুর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগার আগে সেটিতে বিদ্যুৎ ছিল না।”
সেতুটি ধসে পড়ার সময় সেটির উপর বেশ কিছু যানবাহন ছিল।
দুর্ঘটনার সময় নিচের নদীর পানি উত্তাল এবং বরফ ঠান্ডা থাকার কারণে উদ্ধারকর্মীদের উদ্ধার অভিযান চালাতে বেগ পেতে হয়েছে।