এফবিডি ডেস্ক॥
বর্তমানে দেশে টিনধারীর সংখ্যা ৮৩ লাখ, অথচ গত অর্থবছরে আয়কর রিটার্ন দাখিল হয়েছে মাত্র ২৫ লাখ ৩০ হাজার, বিষয়টি মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। আয়কর রিটার্ন দাখিলের ব্যাপারে ব্যক্তি পর্যায়ে আরও উদ্যোগী হওয়া ও সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘কাস্টমস, ভ্যাট অ্যান্ড ইনকাম ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন, এনবিআরের সদস্য (আয়কর তথ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবা) মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন।
তিনি আরও বলেন, আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনয়নে এনবিআরের কার্যক্রমে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালুর ওপর বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ফলে জনগণের ভোগান্তি কমবে এবং রাজস্ব আহরণের হার বৃদ্ধি পাবে।
এনবিআর সদস্য বলেন, দেশে আয়কর প্রদানের সক্ষম লোকের সংখ্যা প্রায় এক কোটি ১৬ লাখ, যদিও এ বিপুল জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ এনবিআরের কর ব্যবস্থাপনার বাইরে রয়েছে। তবে করজাল সম্প্রসারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সারা দেশে কর অঞ্চলের অফিস বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির সার্বিক বিকাশ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়নকল্পে, বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এনবিআর নীতিমালা সংস্কার, যুগোপযোগীকরণ ও প্রয়োজনে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ অব্যাহত রেখেছে, যা একটি চলমান প্রক্রিয়া।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘কোম্পানির রাজস্ব ব্যবস্থাপনার জন্য আয়কর ও ভ্যাট সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখা একান্ত অপরিহার্য, যা একজন উদ্যোক্তার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড সফলভাবে পরিচালনা ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে করজাল বৃদ্ধির জন্য ৩৮টি ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা, ভ্যাটের কেন্দ্রীয় নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা, স্থানীয় পর্যায়ে কেমিক্যাল উৎপাদনে ৬ শতাংশ ভ্যাট ছাড়, মূসক ফরমে পরিবর্তন এবং কম্পিউটার যন্ত্রাংশ আমদানিতে ভ্যাট বৃদ্ধিসহ কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে এবং এ ধরনের পরিবর্তন সম্পর্কে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে অবশ্যই অবগত থাকতে হবে।
ডিসিসিআই সভাপতি জানান, বিগত বছরের ন্যায় ‘ট্যাক্স গাইড ২০২২-২৩’ প্রকাশ করা হয়েছে ঢাকা চেম্বার, বইটিতে আয়কর, ভ্যাট এবং কাস্টমস আইনের বিস্তারিত বিবরণী সন্নিবেশন করা হয়েছে, যা ঢাকা চেম্বারের সদস্যদের পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাজে আসবে।
কর্মশালায় দুটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিসিআইর কাস্টমস, ভ্যাট অ্যান্ড এনবিআর বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির উপদেষ্টা স্নেহাশিষ বড়ুয়া এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এমবিএম লুৎফুল হাদী, এফসিএ।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আরমান হক কর্মশালার মুক্ত আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন এবং সরকারের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের লক্ষ্যে তিনি করদাতা ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যকার সম্প্রতি আরও বাড়ানোর ওপর জোরারোপ করেন।