চট্টগ্রাম প্রতিনিধি॥॥
রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলকে চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার বলা হয়। বিলটি এখন পরিযায়ী পাখির দখলে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিলের পাশের গাছের কাছাকাছি যেতেই কানে আসে কিচিরমিচির শব্দ। বিলের পাশের বড় বড় গাছে অস্থায়ী বাসা বেঁধেছে টিয়ার দল।
গুমাইবিল রাঙ্গুনিয়ায় নিশ্চিন্তপুর পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এবং চন্দ্রঘোনা, মরিয়ম নগর, হোসনাবাদ, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, লালানগর ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডজুড়ে বিস্তৃত।
প্রতি বছর গুমাইবিলের জমিতে ইরিয়ান আমনের বাম্পার ফলন হয়। সেখানকার ফসল দেশের মানুষের আড়াই দিনের খাবার জোগাতে পারে বলে মনে করা হয়। এ বছর প্রায় চার হাজার একর জমিতে আবাদ হয়েছে। কৃষকরাও বাম্পার ফলনের আশা করছেন। তবে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে এই টিয়ার দল।
কৃষকরা বলছেন, বিকেলের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়া পাখির দল নেমে আসে ক্ষেতে। প্রতিটা ঝাঁকে ১৫ থেকে ২০ হাজার করে এই টিয়া পাখি ধান খেয়ে ফেলছে। ফসল বাঁচাতে কৃষকরা দুপুর থেকে রাতঅব্দি পালাক্রমে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন।
গুমাইবিল মূলত ঝিল ছিল। এই হ্রদটি মাছে ভরা এবং বহু প্রজাতির পাখির কলতানে মুখরিত ছিল। শুষ্ক মৌসুমের ধান চাষের জন্য ১৯৮০-৮১ সালের দিকে গুমাইবিলে প্রথম সেচ ব্যবস্থা চালু করা হয়।
বর্ষায় থই থই করা গুমাইবিল হেমন্তে শুকিয়ে গেলেও এই টিয়া পাখির দল যেন লাল-সবুজের ঢেউ বয়ে এনেছে। বিলের আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে তারা। তাদের ওড়াউড়ি দেখে মনে হয়, নীল আকাশেই যেন সাগরের ঢেউ লেগেছে। এই দৃশ্য মন কাড়লেও ফসল নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।