স্পোর্টস ডেস্ক॥
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে টপ ফেভারিটের তালিকায় ইংল্যান্ডের নামটি ছিল একটু নিচের দিকেই। সেখানে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান কিংবা নিউজিল্যান্ড ছিল তুমুল আলোচনায়।
অন্যদিকে ইংলিশ শিবির ছিল ধীর-স্থির। তবে মেলবোর্নের তুঙ্গস্পর্শী ফাইনালে বাজিমাত করল সেই ইংল্যান্ডই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বজয়ের মুকুট এখন বাটলারদের মাথায়। রোববার রোমাঞ্চকর ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বাটলার ব্রিগেড।
২০১০ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেই শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড। ২০১৬ বিশ্বকাপে শিরোপার খুব কাছাকাছি গিয়েও পারেনি তারা। শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ১৯ রান। স্টোকসের করা ওভারে টানা চার ছক্কা হাঁকিয়ে ইংলিশদের হতাশায় ডুবিয়েছিল ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার কার্লোস ব্রাফেট। ইডেন গার্ডেনে শিরোপা বঞ্চিত সেই ইংল্যান্ড এবার মেলবোর্নে উড়াল বিজয় পতাকা সেই স্টোকসের ব্যাটেই।
লো স্কোরিং ম্যাচ। তাতেই বাড়ল উত্তেজনার পারদ। ফাইনালের মতো মঞ্চে পাকিস্তানের ব্যাটাররা যতটা ব্যর্থ, তার চেয়ে সফল ইংলিশ বোলাররা। ৮ উইকেটে ১৩৭ রানে পুঁজি নিয়ে তাই সফল হয়নি বাবর আজম শিবির। লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে চাপে থাকলেও ইংল্যান্ড জয়ের বন্দরে পৌঁছায় স্টোকস ও মঈন আলীর ব্যাটে চড়ে।
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে রানার্সআপ পাকিস্তান। ২০০৯ দ্বিতীয় আসরে প্রথম শিরোপার স্বাদ পাওয়া পাকিস্তান ১৩ বছর পর ছিল নতুন স্বপ্নে বিভোর। কিন্তু দ্বিতীয় ট্রফিতে চুমু খাওয়ার ভাগ্য হলো না বাবর আজমদের। দলটির ম্যাচ হারার টার্নিং পয়েন্ট আসলে পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির চোট। পুরো চারটি ওভার তিনি করতে পারেননি। নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বল করার পর মাঠে বাইরে চলে যান তিনি। বাকি পাঁচ বলে ইফতিখার দেন ১৩ রান। ম্যাচে তখনই হেলে পড়ে ইংল্যান্ডের দিকে।
২৪ বলে ইংলিশদের দরকার তখন ২৮ রান। ১৭তম ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমের ওভারে ইংল্যান্ড রান নেয় ১৬। জয় অনেকটা সুনিশ্চিত হয়ে যায় বাটলারদের। ১৮তম ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে ম্যাচ হালকা জমিয়ে তোলার আভাস দেন হারিস রউফ। কিন্তু তখন ইংল্যান্ডের ১২ বলে দরকার মাত্র ৭ রান। ১৯তম ওভারে ওয়াসিমের বলে মঈন আলী (১৯) সাজঘরে ফিরলেও খুব একটা বিপদে পড়েনি ইংল্যান্ড। এই ওভারের শেষ বলেই এক রান নিয়ে শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতেন বেন স্টোকস, ১৩৮/৫। সঙ্গে গোটা ইংলিশ শিবির।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের ছিল না কোনো ফিফটি। ফাইনালের মঞ্চে পেয়ে যান সেটি। ৪৯ বলে ৫২ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তান। ইংলিশ বোলারদের চাপে বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ১৪ বলে ১৫ রান করে ফেরেন কারানের বলে বোল্ড হয়ে। বাবর আজম শুরুতে ধুঁকলেও শেষ পর্যন্ত করেন ২৮ বলে ৩২ রান।
হারিস (১২ বলে ৮ রান) ব্যর্থ। সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন শান মাসুদ। ছয় বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি ইফতিখার আহমেদ। ১৪ বলে ২০ রান করেন শাদাব খান। চার টেল এন্ডার ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের রান। ৪ ওভারে ১২ রানে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন ইংল্যান্ডের স্যাম কারান। তিনিই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। আদিল রশিদ, ক্রিস জর্ডান দুটি ও বেন স্টোক নেন একটি উইকেট।