ডিজিটাল ডেস্ক
খালিস্থানপন্থী নেতা হারদিপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এ ছাড়া গতমাসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে পদত্যাগ করতে চাপ দেন তার নিজ দল লিবারেল পার্টির কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্য। একইসঙ্গে আগামী বছরের নির্বাচনে ট্রুডোর দল পরাজয়ের সম্মুখীন হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
গত মাসে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাস্টিন ট্রুডো ৯ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এরই মধ্যে তার জনপ্রিয়তায় বড় ধস নেমেছে।
কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসির এক জরিপে দেখা গেছে, আগামী বছরের অক্টোবরে কানাডার সাধারণ নির্বাচনের আগেই জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ২০ পয়েন্ট এগিয়ে আছে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি।
কানাডার জাস্টিন ট্রুডোর এমন অবস্থার মধ্যে গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এরই মধ্যে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো।
তিনি বলেছেন, কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বন্ধুত্ব রয়েছে, সেটি অন্যদের জন্য রীতিমত ঈর্ষণীয়। আমি জানি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং আমি আমাদের উভয় দেশের জন্য আরও সুযোগ, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা তৈরি করতে একসঙ্গে কাজ করব।
তবে বিবিসি ও বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন জাস্টিন ট্রুডো। ২০২২ সালে জাস্টিন ট্রুডোকে বাম পাগল ও দুমুখো হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন ট্রাম্প। অন্যদিকে এর আগে ২০১৯ সালে ন্যাটো নেতাদের বৈঠকে ট্রাম্পকে নিয়ে উপহাস করেছিলেন ট্রুডো।
রয়টার্স ও বিবিসি বলছে, ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক খারাপের দিকে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে কানাডার রপ্তানির হার ৭৫ শতাংশ।
ট্রাম্প প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি আমদানি পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এতেই বিপাকে পরবে ট্রুডোর দেশের অর্থনীতি। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছেন, এই পদক্ষেপের কারণে কানাডার অর্থনীতি মন্দায় পড়তে পারে।
কানাডার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এরই মধ্যে তার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাতভর বহু কানাডিয়ান আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। তবে তিনি তাদের প্রতি আশার বার্তা দিয়ে বলেছেন, আমি বলতে চাই… কানাডা ভালো থাকবে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রুডো সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ট্রাম্পের আরেকবার প্রেসিডেন্ট হওয়া মানে একধাপ পেছনে যাওয়া। ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্টকালীনের চেয়ের দ্বিতীয়বার হবে কানাডার জন্য আরও অনেক চ্যালেঞ্জ।
এছাড়া ন্যাটোভুক্ত দেশ হিসেবে কানাডার প্রতিরক্ষা খাতে তুলনামূলক ব্যয় কম। ধারণা করা হচ্ছে, এনিয়ে ট্রাম্প তার উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীদের অনেক চাপে রাখবেন। সেইসঙ্গে সীমান্তে অভিবাসীর অবৈধ প্রবেশ নিয়ে নিরাপত্তা ইস্যুতে ট্রাম্পের সঙ্গে কাডানার বিরোধ হতে পারে।