শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম

ডলার ব্যয় বাড়ছে ক্রেডিট কার্ডে

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ৮.১১ এএম
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

এফবিডি ডেস্ক॥

দেশে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ডলার ব্যয়ের প্রবণতা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কার্ডে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে কার্ডে লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ৮১ কোটি টাকা (২৩৩ শতাংশ)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয় ৪৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২০ কোটি ৩০ লাখ। আর সেপ্টেম্বরে তা ৫৮৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

জানা গেছে, দেশে নগদ ডলারের প্রধান দুটি উৎস হচ্ছে প্রবাসী ও রপ্তানি আয়। বর্তমানে খাত দুটি থেকেই ডলার আসছে কম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আগের চেয়ে বেশি মানুষ চিকিৎসা, শিক্ষা বা জরুরি প্রয়োজনে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। ডলার সংকটে চিকিৎসা, শিক্ষা বা পর্যটকরা বড় ধরনের সমস্যায় পড়ছেন। তখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করতে গ্রাহকদের উদ্বুদ্ধ করে। সাময়িকভাবে এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হলেও বর্তমানে এর মাধ্যমে অনেক বেশি লেনদেন হচ্ছে।

খোলা বাজারে ডলারের দাম বাড়ায় বিদেশ ভ্রমণে কার্ডে ডলার নিয়ে যাওয়াকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেই উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, দেশে নগদ ডলারের কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় কেউ দেশের বাইরে গিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করলে দেশীয় ডলারের ওপর সরাসরি চাপ পড়ছে না। গ্রাহককে ক্রেডিট কার্ডের টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশি মুদ্রায়। এতে ব্যাংকগুলোর কিছুটা সাশ্রয় হচ্ছে। তবে প্রয়োজন ছাড়া কেউ কার্ডে ডলার খরচ করছে কিনা, তা নজরদারি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ  বলেন, ‘কেউ ক্রেডিট কার্ডে দেশের বাইরে ডলার লেনদেন করতে চাইলে সীমার মধ্যে করতে পারবে। নগদ ডলারের চাপ কমাতে লেনদেন পদ্ধতির সুবিধা সহজ করায় ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বাড়ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা এক ধরনের ডিজিটাল লেনদেন, ভার্চুয়াল নয়। কারণ, কার্ডে পর্যাপ্ত ডলার না থাকলে লেনদেন করা যাবে না।’

এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর ২৭টি ব্যাংকের ৭১টি ক্রেডিট কার্ডে সীমার বেশি লেনদেনের প্রমাণ পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ ব্যাংকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কেন্দ্রীয় ব্যংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গ্রাহককে অবশ্যই সীমার মধ্যে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করতে হবে। ব্যাংকগুলোকে প্রতিনিয়ত তা মনিটরিং করতে হবে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের সুপারভিশনের অংশ হিসেবে এ বিষয়ে নিয়মিত মনিটরিং চলছে।’

 

ব্যাংকগুলো বলছে, করোনার পর চিকিৎসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণ বাড়ায় ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেড়েছে। এ ছাড়া কার্ডে কম খরচে ডলার নেওয়ার সুযোগ থাকায় লেনদেন বাড়তে পারে।

২০২০ সালের জুনে ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকদের হিসাবের বিপরীতে আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড ইস্যুর অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দ্বৈত মুদ্রার এসব কার্ড দিয়ে দেশে বসেই বিদেশের হোটেল বুকিং, নির্দিষ্ট পরিমাণের কেনাকাটাসহ নানা খরচ করা যাচ্ছে। এ ছাড়া বিদেশে যাওয়ার সময়ও অনেকে কার্ডেই বৈদেশিক মুদ্রা অ্যান্ড্রোসমেন্ট করে নিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে, কার্ডে বছরে খরচ করা যাবে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার। গ্রাহকদের কাছে নগদ ও কার্ডে দুভাবেই ডলার বিক্রি করে ব্যাংক। এতদিন নগদের চেয়ে কার্ডে ডলার নেওয়ার খরচ ছিল কম। সম্প্রতি কার্ডেও ডলারের বিনিময় মূল্য নগদের মতোই করে বাফেদা (বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন)।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘এতদিন কার্ডে নিলে ডলারের খরচ কম হতো। এ কারণেও কার্ডে ডলার নেওয়ার পরিমাণ বাড়তে পারে।’

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com