তাড়াশ প্রতিনিধিঃ
দিন-রাতে সুবিধামতো সময়ে মানুষ যাচ্ছে মার্কেটে। বিগত বছরের তুলনায় পণ্যের দাম একটু বেশি হওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ক্রেতা-বিক্রেতার শোরগোলে জমজমাট হয়ে উঠেছে উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের দোকানগুলো। বিশেষ করে তাড়াশ পৌর শহরে ঈদ সামনে রেখে বাহারি ডিজাইন আর মডেলের পোশাক শোভা পাচ্ছে দোকানগুলোতে। ফুটপাত থেকে শুরু করে শহরের সব শ্রেণির দোকানেই নেমেছে ক্রেতার ঢল। তবে পুরুষ ক্রেতার তুলনায় নারী ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। তাড়াশ পৌর শহরের আজাহার আলী মার্কেট, সরকার প্লাজা, শফিকুল ইসলাম শফি মার্কেট, বিউটি বস্ত্রলয় দোকানগুলোতে চলছে জমজমাট কেনাকাটা।
বিক্রেতারা বলেন, ১০ রমজানের পর থেকেই ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনে কেনাকাটার ভিড় আরও বাড়বে।
এবারে দেশি পোশাকের পাশাপাশি বিদেশি পোশাকও মিলছে। ঈদের পোশাক এক হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ছোটদের পোশাকেও রয়েছে ভিন্নতা। মেয়েশিশুদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে লং ফ্রক ও পারর্টি ফ্রক। এ ছাড়া দোকান গুলোতে উঠেছে লেহেঙ্গা ও লং কামিজ। গরমকে সামনে রেখে ছেলেশিশুদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে সুতি টি-শার্ট ও বাবা স্যুট। এ ছাড়া বিভিন্ন ডিজাইনের প্যান্ট। তবে শিশুদের পোশাকের দাম আকাশছোঁয়া। ঈদে তরুণদের পোশাকেও রয়েছে ভিন্নতা। তবে প্রতিবারের মতো এবারও ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবির সমাহার দেখা গেছে দোকান গুলোতে। তবে পাঞ্জাবি কেনার ক্ষেত্রে খাদি পাঞ্জাবির জোগান ও চাহিদা উভয়ই বাড়ছে।
পোশাক ছাড়াও জুতা ও প্রসাধনীর দোকানে ভিড় বাড়ছে। অনেকে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং জুয়েলারিও কিনে নিচ্ছেন। এদিকে তাড়াশে নিম্ন আয়ের মানুষের কেনাকাটার পৌর শহরের ডিগ্রীকলেজ গেটের পশ্চিম পাশে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ভিড় রয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের সাধ্যের মধ্যে পছন্দসই পোশাক কিনে নিচ্ছেন এসব দোকানগুলো নেমেছে ক্রেতার ঢল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা বলেন, তাড়াশ পৌর শহরের দোকানগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা চলছে। কেনাকেটা নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মাহবুবুর রহমান, সেলিম রেজা, ছোটন আহমেদ, ফারুক আহমেদ জানান, তাড়াশে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। বিগত বছরের তুলনায় পণ্যের দাম একটু বেশি হলেও দোকানগুলোতে ক্রেতাদের পদচারণায় ক্রমশ জমে উঠছে। ক্রেতাদের এমন ভিড়ে খুশি ব্যবসায়ীরা। তবে অতিরিক্ত দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।
উপজেলার বাজারের গলিতে মানুষের চাহিদা পূরণে অস্থায়ী দোকানগুলোতে ছিল নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড়। অনেকে তাদের শিশুসন্তানদের নিয়েও এখানে এসেছেন। দেখে-শুনে, দরদাম করে কিনেও নিচ্ছেন প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড়। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী, প্রসাধনী, জুতা এবং পোশাকের প্রতি আগ্রহ থাকে বেশি। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ও প্রসাধনী ক্রয়ে ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা কম হলেও জুতা ও কাপড়ের মার্কেটগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সরগম।
তাড়াশ বাজারের জান্নাতি ফ্যাশানের মালিক মাসুদ রানা জানান, এবার ঈদ উপলক্ষে নতুন নতুন কালেকশন এসেছে। গরমকে প্রাধান্য দিয়ে ডিজাইনে নতুনত্ব আনা হয়েছে। শিশুদের পোশাকের পাশাপাশী থ্রিপিস ও পাঞ্জাবির চাহিদা রয়েছ।
বিউটি বস্ত্রলয়ের মালিক সবুজ আহমেদ জানান,মেয়েদের থ্রিপিস বেশি বিক্রি হচ্ছে। সব কিছুর দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব কাপড়চোপড়ের ওপরও পড়েছে।
তাড়াশ বাজারের সরকার বস্ত্র বিতানের আতাউর রহমান জানান, ক্রেতাদের রোজার শেষের দিকে সব সময় মার্কেট করতে দেখা যায়। কিন্তু এবার ভিন্ন। মাসের শুরুতেই কেনাকাটার মনোযোগ দিয়েছে। সুমাইয়া জাফরিন দোকানের মালিক আরিফ আহমেদ জানান, ছেলেদের পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট-প্যান্ট, মেয়েদের থ্রিপিস, ফ্রক, স্কার্ট ও শিশুদের শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবি-পাজামাসহ নানা নজরকাড়া পোশাকের চাহিদা বেশি।
তাড়াশ বাজাওে কেনাকাটা করতে আসা আলীম হোসেন ও হাসিনা পারভীন বলেন, গত বছরের তুলনায় প্রতি পোশাকে ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকা বেড়েছে। বাচ্চাদের জন্য কাপড় কিনেছি, আগে হাজারের নিচে হলেও এবার হাজার টাকার ওপরে কিনতে হচ্ছে। তাছাড়া মার্কেটগুলোতে পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের পোশাকের আলাদা আলাদা দোকান, জুতার দোকান, কসমেটিকসহ সব প্রকার দ্রব্যসামগ্রীর দোকান রয়েছে। তবে বিক্রেতারা পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি রাখছেন বলে অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেন