পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় তৃতীয় দিনের উদ্ধার অভিযানে ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, নারী ৩০ জন এবং শিশু ২১ জন। এ ছাড়া এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৪ জন।
নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের রংপুর, রাজশাহী ও কুড়িগ্রামের তিনটি ডুবুরি দল।
উদ্ধার হওয়া মরদেহের মধ্যে বোদা উপজেলার ৪৪টি, দেবীগঞ্জের ১৮টি, আটোয়ারীর ২টি, ঠাকুরগাঁও সদরের ৩টি এবং পঞ্চগড় সদরের একটি।
এখন পর্যন্ত যারা নিখোঁজ রয়েছেন তারা হলেন— বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের খালপাড়া গ্রামের হিমালয় বর্মন, সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সুরেন, দেবীগঞ্জ উপজেলার ছত্রশিকারপুর এলাকার ভূপেন এবং পঞ্চগড় সদরের ঘাটিয়ারপাড়া এলাকার জয়া রাণী।
মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) খোলা তথ্য কেন্দ্র থেকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর রায়।
গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) শারদীয় দুর্গোৎসবের মহালয়া উপলক্ষে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক মানুষ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন। ঘাট থেকে নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পর দুলতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ডুবে যায়। পরে উদ্ধার অভিযান শুরু করে প্রশাসন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপরপাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রোববার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মালম্বীরা নৌকা যোগে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণ ক্ষমতার নৌকায় দেড় শতাধিক যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝে গিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়।
ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায়কে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। আজকে (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতের মধ্যে এই কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় জানান, নিহত প্রত্যেক পরিবারকে মরদেহ সৎকারের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।