টিডিএস ডেস্ক॥
পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর শুল্ক কমানোর পাশাপাশি বেঁধে দেওয়া ন্যূনতম দাম প্রত্যাহার করেছে ভারত সরকার। দুটি ব্যবস্থাই ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। তবে দেশের বাজারে এখনো এর প্রভাব নেই। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়ার খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত সবাই দাম বাড়াতে তৎপর থাকেন।
পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান গতকাল রোববার বলেন, ভারত রপ্তানি শুল্ক হ্রাস ও বেঁধে দেওয়া দাম প্রত্যাহার করলেও বাংলাদেশের বাজারে এখনো নতুন পেঁয়াজ ঢোকেনি। এ কারণে বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি।
এ বাজারের আরেকজন পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ভারতের পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলে দাম কেজিতে ৬-৭ টাকা পর্যন্ত কমবে। তবে পেঁয়াজের নতুন চালান বাজারে আসতে আরও ১০ দিনের মতো লাগবে। দেশের সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।
গতকাল রাজধানীর আরেক বড় পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারেও খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কমেনি। সেখানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০-৯৫ টাকা এবং তুরস্কের পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
কারওয়ান বাজার ক্ষুদ্র আড়তদার সমিতির সভাপতি এ টি এম ফারুক বলেন, এত দিন ভারত থেকে রপ্তানি মূল্য ছিল টনপ্রতি ৫৫০ ডলার। অর্থাৎ বাজারে যে দামেই পেঁয়াজ কেনা হতো, তা ৫৫০ ডলার দাম ধরে শুল্কায়ন করা হতো। এখন আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক মিলে দাম নির্ধারণ করবে। আর রপ্তানি শুল্কও কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। তবে নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমবে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার তদারকির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০৫-১২০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে তা ছিল ১১০-১২০ টাকা। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি পেঁয়াজ গতকাল বিক্রি হয়েছে ১০০-১১৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও তা একই দামে বিক্রি হয়েছে।
রাজধানীর আড়তে দাম না কমলেও দেশের পেঁয়াজচাষিরা দাম কমার তথ্য দিলেন। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মথুয়াপুর গ্রামের কৃষক মামুনুর রহমান বলেন, ভারতের উদ্যোগের কারণে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। আগে প্রতি মণ (৪০ কেজি) পেঁয়াজের দাম চার হাজার টাকা পর্যন্ত ছিল। বর্তমানে তা কমে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শনিবার ভারতীয় প্রচারমাধ্যম জানায়, পেঁয়াজের ন্যূনতম ৫৫০ ডলারের যে রপ্তানিমূল্য বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, তা তুলে নিয়েছে ভারত সরকার। রপ্তানির ওপর আরোপিত ৪০ শতাংশ শুল্কও অর্ধেক করে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি করার ব্যয় কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে ২৬ লাখ টন। ক্ষতি বাদে উৎপাদন হয় ২২ লাখ টন। আর বছরে আমদানি হয় ৬ লাখ ৫০ হাজার টন।