নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ ঘণ্টা পর কারখানার ভেতর থেকে এক এক করে ৪৯টি পোড়া মরদেহ বের করে আনা হয়। মরদেহগুলো ফায়ার সার্ভিসের চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। (সোর্স: ডেইলি বাংলাদেশ)
ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের মৃতদেহের পরিচয় জানা সম্ভব হচ্ছে না। উদ্ধারকৃত মৃতদেহের অধিকাংশই বিকৃত হয়ে গেছে। কোনো কোনোটির হাড়গোড় ছাড়া কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। ফলে উদ্ধারের ক্ষেত্রে একটি প্যাকেটে ঠিক কয়টি মৃতদেহ ঢুকানো হয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারছেন না খোদ উদ্ধারকর্মীরাই।
জানা গেছে, বেশিরভাগ শ্রমিকের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয় চতুর্থ তলা থেকে। ওই চতুর্থ তলা থেকেই সবচেয়ে বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকাজ চলার সময় ধ্বংসস্তূপে পাওয়া হাড়গোড়ের একটি এক্সক্লুসিভ ছবি ডেইলি বাংলাদেশের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কোনো এক শ্রমিকের হাড় পড়ে রয়েছে। এতেই বোঝা যায় কতটা ভয়াবহ আগুনে পুড়ে এতো শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, ওই কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। এর আগে, বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ডেমরা, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়। আর আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
এদিকে, মৃতদের মধ্যে ৪৯ জনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেয়া হয়। তাদের মধ্যে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ৪৮ জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আর মরদেহ শনাক্তের জন্য স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩৫ মৃতদেহের বিপরীতে ৪৮ জন নিকটতম স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকারি ডিএনএ এনালিস্ট নুসরাত ইয়াসমিন বলেন, আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ কাজ শুরু করেছি। গতকাল রাত থেকে শনিবার দুপুর দুইটা পর্যন্ত ৪৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ৩৫ জন মৃত ব্যক্তির বিপরীতে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আমাদের নমুনা সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। যারা মৃত ব্যক্তিদের স্বজন বলে দাবি করবেন তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।