শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম

প্রচুর জোগান, বাজারে দাম কমছে না শীতের সবজির

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২, ১১.২৩ এএম
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

এফবিডি ডেস্ক॥

রাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রাকবোঝাই শীতকালীন সবজি ঢুকছে ঢাকার পাইকারি বাজারে। খুচরা বাজারে সবজির সরবরাহও প্রচুর; কিন্তু দাম কমছে না। ৫০-৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। আবার নতুন করে বাজারে আসায় অনেক সবজির কেজি ১০০ বা এর বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

সবকিছু মিলিয়ে চড়া দামের জন্য সবজি কেনার সাধ্য হচ্ছে না অনেকেরই। ক্রেতাদের অভিযোগ, দাম বেশি। কিন্তু কেন বেশি, কত বেশি; এ বিষয়ে চলছে একে অন্যকে অভিযোগের নাটক। খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজারকে, পাইকারি ব্যবসায়ীরা মোকাম বা স্থানীয় বাজার এবং পরিবহন ব্যয়কে সবজির দাম না কমার জন্য দায়ী করছেন।

সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলছে, দেশের মোট সবজি উৎপাদনের মধ্যে ৫২ শতাংশ শীতে এবং ৪৮ শতাংশ হয় গ্রীষ্মকালে। উৎপাদন ব্যয় সবচেয়ে বেশি ঢ্যাঁড়সে। প্রতি কেজিতে ব্যয় হয় ১০ দশমিক ৭৯ টাকা। সবচেয়ে কম খরচ হয় কাঁচা পেঁপেতে, কেজিতে ৪ দশমিক ২৭ টাকা। তবে এ বছর উৎপাদন ব্যয়ের প্রতিবেদন কার্যক্রম চলমান থাকায়, ঠিক কত খরচ হতে পারে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি দপ্তর। অবশ্য গত বছরের তুলনায় এ বছর সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৭ শতাংশ ব্যয় বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে দপ্তরটি।

ঢাকার শাহজাহানপুর, মালিবাগ, ফকিরাপুল ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গড়ে প্রতি কেজি শীতকালীন সবজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজার, পাড়া-মহল্লা ভেদে প্রতি কেজি বরবটি সর্বনিম্ন ৭০ থেকে ৮০, বড় করলা ৬০, ছোট করলা ৭০, পেঁপে ২০ থেকে ২৫, লম্বা বেগুন ৫০ থেকে ৬০, তাল বেগুন ৮০, মুলা ৩০ থেকে ৪০, পাতলা সিম ৪০ থেকে ৫০, নতুন বিচি সিম ১১০, পটোল ৪০ থেকে ৫০, কাঁচা টমেটো ৮০ থেকে ৯০, পাকা বা আমদানি টমেটো ১১০ থেকে ১২০, গাজর ১২০ থেকে ১৩০, কচুমুখী ৫০ থেকে ৬০, কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৫০, ধনেপাতা ১০০ গ্রাম ১০ টাকা, লেবু হালি ২০, ফুলকপি-বাঁধাকপি প্রতি পিস আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০, কাঁকরোল ৮০ থেকে ১০০, লতি ৫০ থেকে ৬০, চালকুমড়া পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৩০ থেকে ৪০, লাউ শাকের আটি ৩০ থেকে ৪০, সরিষার শাক ১০ থেকে ১৫, পালং শাক ২৫ থেকে ৩০, লালশাক ১৫ থেকে ২০, পুঁইশাকের আঁটি ২০ থেকে ৪০, কচুপাতা ১৫ থেকে ২০, কলমির শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি অধিদপ্তরের শাকসবজি উৎপাদন খরচ ও কৃষক পর্যায়ের গড় বাজারদরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষক কেজিপ্রতি সবচেয়ে বেশি লাভ পায় টমেটোর ক্ষেত্রে। এর পরিমাণ প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত। এরপরেই আছে ঢেঁড়স। কিন্তু শতকরা হারে টমেটোর পর সবচেয়ে বেশি লাভ হয় কাঁচা পেঁপেতে। সর্বনিম্ন লাভ হয় বাঁধাকপিতে। এর শতকরা লাভ ১৫৪ শতাংশ বা কেজিপ্রতি ১০ দশমিক ৯২ টাকা।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রেজা শাহবাজ হাদী সবজির উৎপাদন ব্যয় নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘এ বছর মাত্র শীত মৌসুম শুরু হয়েছে। কৃষক পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। এর আগে গ্রীষ্মকালীন ফসলের হিসাব করা হয়েছে। কৃষি আনুষঙ্গিক খরচ বাড়ায় এ বছর ফসলের উৎপাদন ব্যয় গত বছর তুলনায় ৬ থেকে ৭ শতাংশ বেড়েছে। সবজির ক্ষেত্রেও এর কাছাকাছি হবে, বেশি হবে না।’

 

অন্যদিকে বাজারে আরেক দফা বেড়েছে চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দা, আমদানি রসুন, জিরা, লবঙ্গ, শুকনা মরিচ, এলাচ, দারুচিনির দাম। এতে সাধারণ মানুষ আরও বিপাকে পড়েছেন। টিসিবির তথ্য মতে, চিকন চালের কেজি ৩ টাকা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি বা পাইজাম চালের কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৫৪ থেকে ৬০ এবং মোটা চালের কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৪৮ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, টিসিবির তথ্যের থেকে কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে প্যাকেট আটা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ময়দায় ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৮৫ টাকা। প্রতি কেজি আমদানি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। গত ২০ নভেম্বর ছিল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে এই সময়ে বাজারে দেশি ও আমদানি পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং আমদানি পেঁয়াজে ৫ টাকা কমে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com