রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

কতিপয় ভাবনা বইমেলা ঘিরে

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ১.২১ পিএম
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগ্রহীত

বাংলা একাডেমি মোটাদাগে এখন বইমেলার মতো অনুষ্ঠান আয়োজন এবং বড়সড় একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাতেই বেশি ব্যতিব্যস্ত।

আনিসুর রহমান

এবারের বইমেলা শুরু হচ্ছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের পর নতুন সরকারের টানা চতুর্থবারের মতো অভিষেক হয়েছে। সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়ের নিশানার মধ্যে দেশের মানুষ। এর বিপরীতে বই পড়ার এবং বই কেনার প্রবণতা কমুক বা বাড়ুক, অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, আমাদের উচ্ছ্বসিত বই উৎপাদনকারীদের কিচ্ছুটি যায় আসে না।

প্রতি বছরের মতো এবারও কয়েক হাজার বই প্রকাশিত হবে। বই, প্রকাশনা শিল্প, আমাদের সাহিত্য এবং পঠন-পাঠন নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অল্পবিস্তর কথাবার্তা এই ফেব্রুয়ারি মাসে বছরের অন্য সময়ের চেয়ে প্রাসঙ্গিকভাবে একটু বেশিই হবে। তবে এর সবকিছুই অনেকটা ঢাকাকেন্দ্রিক। কেবল রাজধানীকেন্দ্রিক এই বইমেলা দিয়ে দেশের সামগ্রিক পঠন-পাঠন আর বইয়ের ভুবনের কতটা সমৃদ্ধি আনা সম্ভব? এর মধ্যে আমাদের একজন কথাশিল্পী বাংলা একডেমির সাম্প্রতিক ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে ২০১৪ সালে প্রাপ্ত বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ফেরত পাঠিয়েছেন।

এমন প্রেক্ষাপটে বইমেলা ও অন্যান্য কতিপয় প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে চাই:

১. সরকারে থাকা আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী প্রত্যয় ছিল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের। একটি স্মার্ট সংস্কৃতি ছাড়া স্মার্ট জাতি গঠন কি সম্ভব? নির্বাচনী ইশতেহারে সংস্কৃতি নিয়ে উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো কর্মপরিকল্পনা ছিল না। এতে ছিল অনেকটা দায়সারা গোছের কিছু কথাবার্তা।

২. ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের উপজেলা পর্যায়ে সারাদেশে পাঁচশত যুব কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রস্তাবনা ছিল। সেই কমপ্লেক্সে ছোট কলেবরে গ্রন্থাগার, সাহিত্যবিষয়ক অনুষ্ঠানাদির জন্যে মিলনায়তন, নাট্যমঞ্চ এবং প্রেক্ষাগৃহসহ আরও সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা ছিল। বাস্তবতা হচ্ছে বিগত পাঁচ বছরে কোনো তরফ থেকেই কোনোরকম আলোচনা হয়নি প্রস্তাবিত এই যুব কমপ্লেক্স নিয়ে। তাহলে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ক্ষেত্রবিশেষে কেবলই কি কাগুজে বাঘ?

৩. আওয়ামী লীগের ২০০৯-২০১৪ শাসনামলে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে গঠিত কমিটি সংস্কৃতি বিষয়ে কতিপয় সুপারিশ প্রণয়ন করেছিল। সেই সুপারিশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে জমাও দেয়া  হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪-২০২৩ সময়ের মধ্যে দুই মেয়াদের শাসনামলে সেই সুপারিশমালা বাস্তবায়ন তো দূরের কথা, আলোর মুখই দেখেনি।

৪.  একই মেয়াদে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে প্রধান করে গঠিত কমিটি দেশের গ্রন্থাগার নীতির খসড়া প্রণয়ন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে জমা  দিয়েছিল। সেই খসড়াটিও আজপর্যন্ত কর্মপরিকল্পনায় কতটুকু অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তা আমাদের জানা নাই।

৫. স্মার্ট বাংলাদেশের ডামাডোলে কোন যুক্তিতে ২০০৬ সালে জামায়াত-বিএনপি প্রণীত সংস্কৃতিনীতি বলবৎ রেখে দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পরিচালিত হচ্ছে? বিগত দুই মেয়াদের সংস্কৃমন্ত্রীদ্বয় অনেকটা রুটিন দায়িত্ব পালন করেই কি দায় সেরেছেন?  যার ফলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো আমলাতন্ত্রের বাড়বাড়ন্তের খপ্পরে পড়েছে, বিশেষ করে বাংলা একাডেমি।

৬. বিগত প্রায় দেড় দশকে ধরে বাংলা একাডেমির নির্বাহী পরিষদে সদস্যদের মধ্যে থেকে লেখক প্রতিনিধি নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হলো না কেন? বাংলা একাডেমি আইনে কতগুলো গলদ রয়ে গেছে, বিশেষ করে নির্বাহী পরিষদে প্রতিনিধি নির্বাচন নিয়ে। এই গলদ দূরীকরণসহ সময় এসেছে বাংলা একাডেমি আইনকে আধুনিকায়ন করে, প্রতিষ্ঠানটির স্বায়ত্বশাসন পুনরুদ্ধার করা এবং আমলাদের বাড়াবাড়ির  রাশ টেনে ধরা।

৭. বাংলা একাডেমি পুরস্কারটিও পুরোপুরি বিতর্কমুক্ত করা দরকার নয় কি? এবারকার বেশিরভাগ পুরস্কারই যোগ্য লেখকদের দেয়া হয়েছে বটে। তবে দু-একটি বিষয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়।  নাটক  বিভাগকে কোন যুক্তিতে নাট্যসাহিত্য করে গোঁজামিলের আশ্রয় নিয়ে, এই শাখায় একজন নাট্যকারের সঙ্গে একজন ‘অ-নাট্যাকারকেও’ বাংলা একাডেমি পুরস্কারের জন্যে বেছে নেয়া হলো?  বছর কয়েক আগে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বাংলা একাডেমি পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়াবার পরামর্শ দেয়া হলেও, সেই পরামর্শকে আমলে নেয়া হলো না কেন?

৮.  স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ‘বঙ্গবন্ধু লেখক ট্রাস্ট’ নামে একটি স্বাধীন ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন। ১৯৭৫-এর অগাস্ট ট্রাজেডির পর সেই ট্রাস্ট অকার্যকর হয়ে যায়।  স্বাধীনতার অর্ধশতক পরেও সেই ট্রাস্ট কেন পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে না?

৯. বাংলা একাডেমির প্রয়াত মহাপরিচালক এবং সভাপতি শামসুজ্জামান খান কতগুলো উদ্যোগ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন যার মধ্যে আন্তর্জাতিক অনুবাদ প্রতিষ্ঠান, লেখক ক্লাব, লেখকদের জন্যে অতিথিশালা উল্লেখযোগ্য। তাঁর মৃত্যুর পর এসব উদ্যোগ নিয়ে কোনো তরফ থেকেই তৎপরতা দৃশ্যমান কেন হলো না?

১০. ১৯৭৪ সালে কবি জসীমউদ্দীনের সভাপতিত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে শুরু হওয়া দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন, ১৯৭৫ সালের ট্রাজেডির পর বন্ধ হয়ে যায়। সেই সম্মেলন শামসুজ্জামান খান পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং কয়েক বছরের ধারাবাহিকতাও রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর সেই সম্মেলনটিও আর ধারাবাহিকতা রক্ষা কেন করতে পারল না? তরুণ লেখক প্রকল্পের বেলাতেও একই প্রশ্ন তোলা যায়।

১১. আমাদের মেধাস্বত্ব আইনটিও আধুনিক এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিণত করা দরকার। আমাদের কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক সৃষ্টি বিদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বহুজাতিক কোম্পানি যেমন গুগোল বা ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্ম বিনা অনুমতিতে কিংবা বিনামূল্যে ব্যবহার করলে এর পরবর্তী করণীয় কী হবে? অন্য অনেক দেশের সঙ্গে এসব বহুজাতিক কোম্পানির চুক্তি রয়েছে। আমাদের এরকম কোনো চুক্তি রয়েছে কি?  সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা কর্তৃপক্ষ যদি কোনো বইয়ের ফটোকপি করে ব্যবহার করে, এর বিপরীতে লেখকের প্রাপ্য মূল্য কীভাবে পরিশোধ করা হবে? পশ্চিমে দু-একটি দেশে ‘ফটোকপি তহবিল’ নাম একটি স্বতন্ত্র তহবিল গঠনের দৃষ্টান্ত রয়েছে। এই তহবিল থেকে প্রতিবছর শত শত লেখককে বৃত্তি দেয়া হয়ে থাকে।

১২. প্রায় সতেরো কোটি মানুষের দেশে উপজেলা পর্যায়েই গণগ্রন্থাগার নেই।  তারপরও আমরা স্মার্ট জাতি হবার স্বপ্ন দেখতে পারি। দোষের কিছু নেই।  কিন্তু গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার আরও আরও উদ্যোগ বা নীতির দরকার নেই কি? ডিজিটাল রমরমা যুগে হুমকির মুখে থাকা ডাকঘরগুলোকে ডিজিটাল  তথ্যব্যাংক, ডাক ও বইঘর হিসেবে উন্নীত করা যায় না কি? এই বিষয়ে সংষ্কৃতি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করতে পারে।

১৩. এআই  (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ) বা ‘কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা’ কিংবা ‘কৃত্তিম চৌর্যবৃত্তি’ মোকাবিলা করার জন্যে আমাদের প্রস্তুতি কী? এই বিষয়ে আমাদের আইন বা নীতিমালা কী? এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষীয় তরফের কোনো খবর আমাদের জানা নেই।  পশ্চিমের দেশগুলোতে ইউরোপীয় সংসদ থেকে শুরু করে এসব বিষয়ে ধাপে ধাপে নানা পর্যায়ে আলোচনা বিতর্ক দেন-দরবার হচ্ছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনকানুনও প্রণয়ন করা হচ্ছে। প্রাচ্যে আমরা ভারত চীন, কোরিয়া, জাপানের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করে পশ্চিমের আলোকে নীতি প্রণয়ন করতে পারি।

১৪. প্রতিনিয়ত নতুন নতুনা শব্দের উদ্ভব হচ্ছে কিংবা অন্যবিধ ভাষা ও দেশ থেকে আমাদের ভাষায় বহু শব্দ-পদ জায়গা করে নিচ্ছে। এসবের হালনাগাদ খবরা-খবর করার জন্যে আমাদের কোনো কর্তৃপক্ষও নেই, উদ্যোগও নেই। বাংলা একাডেমি মোটাদাগে এখন বইমেলার মতো অনুষ্ঠান আয়োজন এবং বড়সড় একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাতেই বেশি ব্যতিব্যস্ত। বইমেলা আয়োজনের কাজটি কি প্রকাশক সমিতির হাতে ছেড়ে দিয়ে একাডেমি অন্যসব গুরুত্বপূর্ণ কর্মযজ্ঞে মনোনিবেশ করতে পারে না? আমাদের স্থায়ী অভিধান সভাও নেই কেন? ভারতের সঙ্গে যদি আমাদের যৌথ নদী কমিশন থাকে, তাহলে ভারত এবং মিয়ানমার মিলে আমাদের ‘যৌথ ভাষা কমিশন’ও থাকতে পারে না কি? এর পাশাপাশি আমাদের  দরকার ভাষা উন্নয়ন বোর্ড।

১৫. হাল আমলে দেশব্যাপী জেলা পর্যায়ে সাহিত্য সম্মেলন এবং বইমেলা আয়োজন একটি ব্যর্থ উদ্যোগ হিসেবে সামনে এসেছে। এই ব্যর্থতার অন্যতম কারণ জনপ্রতিনিধি, স্থানীয়  সুধীমহল, জাতীয় এবং প্রান্তিক পর্যায়ের লেখক এবং প্রকাশকদের পাশ কাটিয়ে আমলাদের রাষ্ট্রাচার প্রবণতা আর খবরদারির খেসারত হিসেবে এসব উদ্যোগ মাঠেই মারা পড়েছে। করলে, এসব উদ্যোগ সফল করার জন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রকে সমন্বয়ের দায়িত্বে রেখে জাতীয় সংসদে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটি একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্যে সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে একটি কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিতে পারে।

১৬. আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি বটে, কিন্তু বাংলাদেশের কোনো বই দেশের সীমানার বাইরে থেকে অনলাইনে কেনা-বেচার সুযোগ আছে কি? অথচ পাশের দেশ ভারত কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছে। এমনকি আফ্রিকার দেশগুলোর প্রকাশনা শিল্প এই পেশাদারত্ব অর্জন করতে পেরেছে। আমাদের প্রকাশনাশিল্প পারল না কেন?

১৭. অন্যান্য অনেক দেশে ‘শ্রুতিপুস্তক’ বা অডিওবুকের প্রচলন হয়েছে। আমাদের দেশেও এই সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা যায় না কি? তারপর ই-বুক বা অন্তর্জাল পুস্তকের সম্ভাবনার যুৎসই অগ্রগতি কতদূর আমাদের দেশে?

১৮. আমাদের দেশে যে ধরনের কাগুজে বই ছাপা হয়, সেই সঙ্গে বাঁধাই এবং পৃষ্ঠা সাজানোর যে হালহকিকত তা নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রকাশনা শিল্পকে দাঁড় করানোর সম্ভাবনা বড়ই সীমিত। অথচ প্রতিবেশী দেশগুলোসহ বাইরের দুনিয়া এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। আমরা পারলাম না কেন?

১৯. এই শতকের শুরুর দিকে ২০০৪ সালে প্রবর্তিত ‘ইউনেসকো সাহিত্য নগরী’র তালিকায় দুনিয়ার ষাটের কাছাকাছি শহর স্থান করে নিয়েছে। এর মধ্যে এশিয়ার দেশগুলো থেকে স্থান পেয়েছে নয়টি নগরী। এগুলো হচ্ছে ভারতের কেরালা রাজ্যের কালিকট, পাকিস্তানের লাহোর, দক্ষিণ কোরিয়ার বুচেওন আর উন্জু, ইরাকের বাগদাদ ও সোলাইমানিয়াহ, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, চীনের নানজিং, জাপানের ওকাইমা এবং সৌদি আরবের তাইফ নগরী। ইউরোপের বাইরে প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী গর্বিত ভাষা-সাহিত্যের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কোনো নগরী জাতিসংঘের সাহিত্যনগরী হবার জন্যে আজ পর্যন্ত আবেদন করার উদ্যোগই নিতে পারল না কেন?

উত্থাপিত প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করার এখনই সময়। মাসব্যাপী বইমেলার শুরুতেই প্রশ্নগুলো সংশ্লিষ্টদের নজরে আনতে চাই। দায়িত্ব ও ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা মানুষগুলোর ভাবনাও আম-আদমি হিসেবে জানার অপেক্ষায় থাকলাম আমরা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com