মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন

মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছে বেসরকারি খাত

  • আপডেট সময় বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২, ৯.৫৫ এএম
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

এফবিডি ডেস্ক॥

সবার প্রত্যাশা একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই। হোক সে মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত। বিশেষ করে যারা শহরে বাস করেন তাদের কাছে একচিলতে জমি কিংবা ছোট বাসা যেন অনাবিল স্বপ্নের মতো ঘিরে থাকে। এখন অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আবাসন খাতে বিনিয়োগ করছে। একটাই উদ্দেশ্য, আগামী প্রজন্মকে একটু স্বস্তিতে রাখা। শুধু তা-ই নয়, শেষ বয়সে ভালোভাবে একটু মাথা গোঁজার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছে বেসরকারি খাত। যদিও সরকারি খাত অনেক আগে থেকে স্বপ্ন পূরণে উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। বেসরকারি খাত এগিয়ে আসার ফলে এখন প্রতিনিয়ত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছে।

এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে। আর নগরায়ণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দেশের আবাসন খাত। ফলে দিন দিন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বিদেশি একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের নগরায়ণের হার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নগরীর মধ্যে ঢাকায় বাড়ছে সবচেয়ে বেশি ।

বিশ্বের ক্রমবর্ধমান মেগাসিটিগুলোর মধ্যে ঢাকা এখন অন্যতম। দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশের বেশির বসবাস রাজধানী ঢাকায়। জাতিসংঘের তৈরি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকা হবে বিশ্বের ষষ্ঠ জনবহুল নগরী।

দেশের বেসরকারি আবাসন খাত মোট নগর আবাসনের ৫০ শতাংশ মেটায় বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আবাসিক ব্যবসায়িকদের প্রতিষ্ঠান রিয়াল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৯১ সালে। সেই থেকে যাত্রা শুরু রিহ্যাবের। সে সময় রিহ্যাবের সদস্য সংখ্যা ছিল হাতে গোনা ১১।

দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির সঙ্গে মানুষের মধ্যে ভালো জায়গায় থাকার প্রবণতা বাড়ছে। মূলত এটি দেশের সার্বিক অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা বেশি বলে প্রতীয়মান। আবাসন খাতের সঙ্গে প্রায় ২৭০টি সংযোগ শিল্প জড়িত, যা সরাসরি জিডিপিতে অবদান রাখছে। তবে বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) মনে করে, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। বিনিয়োগ বাড়লে একদিকে যেমন আবাসন খাত আরও ব্যবসায়ে সম্প্রসারণ করতে পারবে। অন্যদিকে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের আবাসন সংকট অনেকটা দূর হবে।

এদিকে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের পাশাপাশি দেশে এখন আবাসন খাতে বিদেশি বিনিয়োগে আগ্রহ রয়েছে। সম্প্রতি এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) কম ও সীমিত আয়ের শহুরে মানুষের আবাসনের খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে তারা এটি সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশীদারত্বের ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ করতে চায়।

বিডার তথ্য অনুযায়ী গত কয়েক বছরে জাপান, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, চীন ও কোরিয়ার মতো দেশ থেকে ৪০টির বেশি কোম্পানি আবাসন খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে। আরও ৩০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ পাইপলাইনে রয়েছে।

সারা বিশ্বে আবাসন ব্যবসা যেখানে কমে আসছে, সেখানে বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীসহ দেশের আবাসন খাত এখনও সাফল্যের ধারাতে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় আবাসন ব্যবস্থা কম হওয়ার ফলে আবাসনের চাহিদা এখনও তুঙ্গে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাতে দেশের বেসরকারি খাত ও বিভিন্ন বিদেশি আবাসন কোম্পানি এগিয়ে আসছে। তবে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে আবাসন খাত এত দুর্যোগের মধ্যেও সচল রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে অর্থনীতি প্রায় স্থবির হয়ে পড়লেও করোনাপরবর্তী আবার ঘুরে দাঁড়ায় আবাসন খাত। তবে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে আরও উৎসাহ দিতে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে সংশ্লিষ্ট খাত।

এদিকে আবাসন খাতকে চাঙ্গা রাখতে বেশ কয়েকটি ব্যাংক আবাসন খাতে গত এক বছরে ৭ হাজার কোটি বেশি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এই ঋণ দেওয়ার ফলে আবাসন খাত এখন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com