এফবিডি ডেস্ক॥
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ফের বছরে দুইবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আগামী বছরের জানুয়ারিতে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি প্রণয়নের কাজ শুরুর অংশ হিসেবে সোমবার অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জানুয়ারিতে অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা দেশের অর্থনীতিবিদসহ সব স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে মুদ্রা সরবরাহ, সংরক্ষিত মুদ্রা ও সুদহারসহ সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে অলোচনা করেছি। অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
২০০৬ সাল থেকে বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হচ্ছিল। ২০১৯ সাল থেকে সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বছরে একবার মুদ্রানীতি প্রণয়নের ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ওই বছরের ৩১ জুলাই একবারই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। পরবর্তী ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরেও একবারই মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সম্প্রতি ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণের শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বছরে চারবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করার পরামর্শ দিয়েছে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্য নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। আর পরিসংখ্যান ব্যুরো বছরে দুইবার এসব তথ্য প্রকাশ করে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকও বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে।
এরই ধারাবাহিকতায় আগামী জানুয়ারিতে অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মুদ্রানীতি বিষয়ে সোমবার দেশের অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈঠকও করেছে। বৈঠকে সুদের হার পুনর্র্নিধারণ, শরিয়া পরিচালিত ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের আমানতের অবস্থা, ডলারের একক রেট চালু করা, খেলাপি ঋণ হ্রাস, মূল্যস্ফীতি এবং পণ্য আমদানি ও রপ্তানির আড়ালে পাচার বন্ধে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা। পাশাপাশি মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান আইন, নীতি ও পদ্ধতি সম্পর্কেও নিজস্ব মতামত তুলে ধরেছেন তারা।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই), বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন।
পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘মুদ্রানীতিতে সুদের হার বেঁধে দেয়া রয়েছে। এটা মুক্তবাজার অর্থনীতির সঙ্গে মানায় না, তবে গভর্নর আবদুর রউফ তালকদার জানিয়েছেন যে, কিছু ক্ষেত্রে সুদের হার ৯ শতাংশের স্থলে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘শরিয়াহ পরিচালিত ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের আমানতের অবস্থা এবং কবে নাগাদ তা স্বাভাবিক হবে, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ডলারের একক রেট চালুর বিষয়ে গভর্নর সময়ের কথা উল্লেখ করেছেন।
‘খেলাপি ঋণ হ্রাস, মূল্যস্ফীতি এবং পণ্য আমদানি ও রপ্তানির আড়ালে পাচার বন্ধে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।’