চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের শুল্ক-কর আদায় গত দুই মাস ধরে নিম্নমুখী। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অক্টোবরে ২৫ শতাংশ ও সেপ্টেম্বরে ২৩ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই পরিস্থিতি শুল্ক-কর আদায়ের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭৪ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয় ৫৯ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দামে অস্থিরতা, লোকসান আতঙ্ক, ডলার সংকট ও ঋণপত্র খুলতে বিলম্ব হওয়ার কারণে পণ্য আমদানি কমছে। অন্যদিকে কমেছে রপ্তানিও। রপ্তানি পণ্যের ৮০ শতাংশ যায় পোশাক খাত থেকে। এ ছাড়া ডলার সংকট কাটাতে ফ্রিজ-গাড়িসহ ১৩৫ ধরনের বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে ২০ শতাংশ বাড়তি নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ২৫ মে প্রজ্ঞাপন জারি করে নতুন শুল্কহার কার্যকর করেছে এনবিআর। এর প্রভাবে পণ্য আমদানিতেও ভাটা পড়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক মন্দায় পোশাক খাতেও মন্দা যাচ্ছে। অক্টোবরে রপ্তানির ৩০ শতাংশ কম হয়েছে। নভেম্বরেও ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অর্ডার কম আসছে। রপ্তানি কমে যাওয়ায় শুল্ক আদায়ও কমে আসছে।
চলতি অর্থবছরের আগস্টে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে ৫ হাজার ১০৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা ও অক্টোবরে ৪ হাজার ৯১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ৩৯৩ কোটি ৩০ লাখ ও অক্টোবরে ১৯৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা কমেছে রাজস্ব আদায়। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মাহফুজ আলম বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় আমদানি কমেছে, এতে রাজস্ব আদায় কমেছে। সামনের দিনগুলোতে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে আশা করছি।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম জানিয়েছেন, বৈশ্বিক মন্দার কারণে ডিমান্ড ও সাপ্লাই কমেছে। এ ছাড়া বায়িং ক্যাপাসিটি কমছে, সাপ্লাই কমেছে, যার কারণে দেশে পণ্য কমে আসছে। বিভিন্ন দেশে মন্দার কারণে আমাদের দেশ থেকে পণ্য রপ্তানিও কিছুটা কমেছে। সব মিলিয়ে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।