বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
আ’লীগ করার সুফল ১৫ বছরে অবৈধ সম্পদের পাহাড়॥ হেনরী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অবশেষে দুদকের ২ মামলা পরিবারের জিম্মায় মুক্ত হলেন সাংবাদিক মুন্নী সাহা যমুনা রেলওয়ে ব্রীজ: পরীক্ষামুলক ট্রেন চলাচল শুরু সিরাজগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটর সাইকেল আরোহী নিহত সিরাজগঞ্জ পৌর আ’লীগের সহ-সভাপতি ফিলিপস কারাগারে এস আলমের সঙ্গে আর ব্যবসায়ে আগ্রহী নয় ব্যাংকগুলো, বন্ধ হয়ে গেছে তেল-চিনি কারখানা ঠিকাদারের খোঁজ নেই, ছয় বছরেও শেষ হয়নি ২২ কোটির আইটি প্রকল্পের কাজ নভেম্বরে ১৩ শতাধিক সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয় কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি অবৈধ ছিল: হাইকোর্ট আগে সংস্কার, এরপর নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কি কমানো সম্ভব?

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬.০৬ পিএম
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগ্রহীত

টিডিএস ডেস্ক॥

বাংলাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ আগরওয়ালার বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে সিআইডি।
এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে স্বর্ণ ও হীরা আমদানির নামে বিদেশে অর্থ পাচার-সহ নানা অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বর্ণের বাজারে তথাকথিত ‘সিন্ডিকেট’ ভেঙে দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি হয় না। ফলে এই খাতে ‘সিন্ডিকেট’র দ্বারা স্বর্ণের মূল্য নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ পুরনো। চোরাচালানের মাধ্যমে যে সব স্বর্ণ আসে, সেগুলো দেশের বাজারে বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ীরাও স্বীকার করেন। ফলে চোরাচালান-কেন্দ্রিক এই খাত নজরদারির বাইরে থাকার সুযোগ নিচ্ছেন তারা।
দাম নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছেমতো তা নির্ধারণেরও সুযোগ পাচ্ছেন। কারণ সরকার স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে না, করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
তবে, ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা ত্রুটিপূর্ণ। ফলে সোনা আমদানি হয় না।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খাতে জবাবদিহিতা ও নজরদারি নেই। ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ কর। আর মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে, আন্তর্জাতিক বাজার বা প্রতিবেশী দেশের বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে কি না, তাও দেখা হয় না।
ফলে যেভাবে উচ্চহারে দাম নির্ধারণ করা হয় সেটা কতখানি যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন সব সময়ই ছিল বলে জানান তারা।
তাই পুরো বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছ্বতা আনা, সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার অংশগ্রহণ জরুরি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এছাড়া চোরাচালান ছাড়া বৈধ পথে সোনা আমদানি কীভাবে করা যাবে সে বিষয়গুলো আরো সহজীকরন করারও আহ্বান জানান তারা।
কেন স্বর্ণ আমদানি হয় না ?
সরকার ২০১৮ সালে সোনা আমদানি নীতিমালা প্রণয়ন করে। পরে ২০২১ সালে তা সংশোধন করা হয়।
স্বর্ণের বাজার ও জুয়েলারি ব্যবসায় স্বচ্ছ্বতা আনতে ওই বছরই একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক-সহ ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ আমদানির লাইসেন্স দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
শুরুর দিকে পাঁচ-ছয়টি প্রতিষ্ঠান কিছু স্বর্ণ আমদানি করলেও, পরে তা মুখ থুবড়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা নিজেরাও স্বীকার করছেন, বাংলাদেশে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি হয় না। কিন্তু কেন হয় না, এ প্রশ্নে ব্যবসায়ীরা দুষছেন সাবেক সরকারের স্বর্ণ আমদানির নীতিমালাকে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাম নির্ধারণ কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, আগের সরকারের গোল্ড ইমপোর্টের ক্যাটেগরিটা বেশ ত্রুটিযুক্ত ছিল। আমরা অনেক আবেদন করেছি যে, গোল্ডের ইমপোর্টের যে বিষয়টা লাইসেন্স দিলেন কিন্তু গোল্ড আমদানি করার কোনও সুযোগ নাই!

“কারণ ওখানে ট্যাক্স ক্যাটাগরি যেটা ইমপোজ করা আছে অলমোস্ট ১৮ থেকে ১৯ পারসেন্ট সব কিছু মিলিয়ে। অন দ্য আদার হ্যান্ড এটা ‘হ্যাসেলফুল’ (ঝামেলায় পরিপূর্ণ) ছিল”, বলেন মি. রহমান।
এছাড়া সোনা আমদানির পুরো প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এবং নানা জটিলতায় সেটা আর সামনে এগোতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন মি. রহমান।
তিনি জানান, গোল্ড ইমপোর্টের জন্য পারমিশন থেকে শুরু করে অলমোস্ট ফিনিশ করা পর্যন্ত ২৪ থেকে ২৫ দিন পার হয়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিছু লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। পাঁচ-ছয়জন ইমপোর্টার ইমপোর্ট করেছিল, কিন্তু তারা আর সামনে এগোতে পারেনি এসব বাধাগুলোর কারণে!
‘শিথিল’ ব্যাগেজ রুলস
ব্যবসায়ীদের দাবি সরকার একদিকে আমদানি নীতিমালা করে সোনা আমদানি করতে বলে, অথচ ব্যাগেজ রুলসে দেয়া হয়েছে শিথিলতা।
ব্যাগেজ রুলসে এক ভরি স্বর্ণ শুধুমাত্র চার হাজার টাকায় দেশে আনার সুযোগ রয়েছে।
মি. রহমান বলেন, এটা টোটালি কন্ট্রাডিকটরি (স্ববিরোধিতায় ভরা)। ইমপোর্টকে যদি এনকারেজ করতে চান আবার ব্যাগেজ রুলসের আওতায় সুযোগ করে দেন, তাহলে তো ইমপোর্ট হবে না।
“এই জটিলতাগুলো নিয়ে আমরা চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীর-সহ অনেকবার চেষ্টা করেছি তিন বছর থেকে। কিন্তু তখন এনবিআরের যারা কর্ণধার ছিলেন তারা আমাদের কথায় কান দেননি।”
বিএফআইইউ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এই খাতে আমদানি রফতানির সুযোগ হলে ২২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হবে। যাতে দশ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আহরণ হবে দেশের।
এই প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে মি. রহমান দাবি করেন, এই সেক্টরকে এগুতে দেয়া হয়নি এবং এই খাত সরকারের সহযোগিতা পায়নি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com