বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
যমুনা নদীর ভাঙনরোধে ক্রসবার নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব শিক্ষাঙ্গণ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা চলনবিলের কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানির নিচে যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার গাড়ি পারাপার: টোল আদায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ সিরাজগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত, আহত তিন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত দুই ফুট বাঁধই ভরসা, আতঙ্কে নিদ্রাহীন রাত কাটে খুলনা উপকূলবাসীর খুলনা অঞ্চলের ভরত ভায়না দেউল হতে পারে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র খুলনায় সড়ক বিভাগের বাধায় বন্ধ কেসিসির ৭ মোড়ের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ সাবেক এমপি আজিজের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

ব্যবসায়ীরাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বর্ণের ক্রেতা

  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২, ২.০৯ পিএম

স্টাফ রিপোর্টার॥

নিলামের মাধ্যমে ২৫ কেজি ৩১২ গ্রাম স্বর্ণ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য ১৪ থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হবে। দরপত্র চূড়ান্ত হলে ডিসেম্বর নাগাদ বিক্রি করা হবে ওই পরিমাণ স্বর্ণ। তবে এই স্বর্ণ কেনার এখতিয়ার সাধারণের নেই। শর্তসাপেক্ষে কেবল স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাই হবেন এর ক্রেতা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ী খাতে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কেজি ও স্থায়ী খাতে ১৫৯ কেজি স্বর্ণ মজুত রয়েছে। স্থায়ী খাত থেকে ২৫ কেজি ৩১২ গ্রাম স্বর্ণ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটা বাজারের চাহিদার তুলনায় নিতান্তই কম বলে উল্লেখ করেছে বাজুস।

হঠাৎ করেই স্বর্ণ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে অনুযায়ী ডিসেম্বর নাগাদ ২৫ কেজির কিছু বেশি স্বর্ণ বিক্রি করতে দরপত্র আহ্বান করেছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটি। তবে যে পরিমাণ স্বর্ণ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা বাজারের চাহিদার তুলনায় খুবই কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, আনক্লেইমড বা অভিযোগ নিষ্পত্তি হওয়া স্বর্ণ বিক্রি করা হবে।

বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, চাহিদার তুলনায় এই স্বর্ণ সামান্য। স্বর্ণ আমদানি করতে গিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা নিয়মিত স্বর্ণ নিলাম করলে বাজারে ঘাটতি তৈরি হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, স্বর্ণ বিক্রি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত কাজেরই অংশ। তবে যখন স্বর্ণের বিষয়ে কারও কোনো দাবি থাকে না, তখনই বিক্রির উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে বাজারে চাহিদা থাকলেও কিছুই করার থাকে না।

স্বর্ণ বিক্রি কেন?

বাজারে চাহিদা অনেক। সেই চাহিদার তুলনায় স্বল্প পরিমাণ স্বর্ণ বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আরও বেশি স্বর্ণ বাজারে ছাড়ার দাবি জানিয়েছে বাজুস।

সংগঠনের সহ-সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, বৈধ স্বর্ণের এখন আকাল। বিশ্ব বাজারে স্বর্ণের দাম এখন আকাশচুম্বি। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও বেশি পরিমাণ স্বর্ণ বাজারে ছাড়া প্রয়োজন ছিল। এতে সংকট কিছুটা প্রশমিত হতো।

বাজুসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বেড়েছে। কিন্তু লাভের অংক সেই আগের মতোই। এতে অনেক ব্যবসায়ীই ব্যবসার সক্ষমতা হারিয়েছেন। স্বর্ণ বিক্রির ক্ষেত্রে স্বল্প দিনের ব্যবধানে আরও বড় উদ্যোগ নিলে তার সুফল মিলবে।

দেশে বছরে স্বর্ণের চাহিদা প্রায় ৪০ টন। এই বিপুল চাহিদার সামান্য অংশ আসে পুরনো অলংকার থেকে। বাকিটা ব্যাগেজ রুলের আওতায় বিদেশ থেকে আসে। বিদেশ থেকে স্বর্ণ আমদানির দুয়ার উন্মুক্ত করেছে সরকার। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় স্বর্ণ আমদানি তেমন একটা বাড়েনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বর্ণের উৎস:

বাংলাদেশ ব্যাংক স্বর্ণ আমদানি করে না। প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তাহলে কোথা থেকে আসে এতো স্বর্ণ?

জানা যায়, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর বিমানবন্দর থেকে মাঝেমধ্যে স্বর্ণ জব্দ করে। এছাড়া স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে জব্দ করা হয় অবৈধ বা চোরাচালানের স্বর্ণ।

এসব স্বর্ণ যার বা যাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জব্দ করা সেই স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা থাকে। মামলা নিষ্পত্তির পরই কেবল সেই স্বর্ণ বিক্রির উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

স্বর্ণ ক্রয়ের প্রক্রিয়া:

বাংলাদেশ ব্যাংক স্বর্ণ বিক্রি করলেও ইচ্ছা করলেই যে কেউ এই স্বর্ণ কিনতে পারবে না। এক্ষেত্রে কেনার এখতিয়ার শুধুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। তারপরও ক্রেতা হবেন কেবল ট্রেড লাইসেন্সধারী স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বর্ণ কিনতে ব্যবসায়ীদের নিলামে অংশ নিতে হবে। ট্রেড লাইসেন্স হালনাগাদ হতে হবে। প্রয়োজন হবে টিআইএন সনদ; মূল্য সংযোজন কর-মূসক নিবন্ধন; বিআইএন সনদ; স্বর্ণ ক্রয়, মজুত ও সরবরাহের লাইসেন্স; সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যপদ; আর্থিক সচ্ছলতার বিষয়ে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সনদ।

নিলামে চূড়ান্ত হলে ক্রেতার তালিকা প্রকাশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে তাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট সোনার বার, অলংকার, টুকরো বা পাত। স্বর্ণ কতটুকু খাঁটি, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবেন নিলামে অংশ নেয়ার জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ ক্রয়ের কার্যাদেশ দেয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে পুরো মূল্য জমা দিতে হবে। অর্থ পরিশোধ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্বর্ণ সরবরাহ নিতে হবে। তাতে ব্যর্থ হলে দরদাতা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জামানত বাজেয়াপ্ত ও প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কতটুক মজুদ :

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ী খাতে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কেজি স্বর্ণ রয়েছে। আর স্থায়ী খাতে রয়েছে ১৫৯ কেজি স্বর্ণ। এখন স্থায়ী খাত থেকে ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে জব্দ করা স্বর্ণের কর্তৃত্ব পেতে বিলম্ব হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের। এক্ষেত্রে এনবিআর বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভূমিকা নিতে হয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com