সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন

বাজারে চিনি-আটার সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে, দামও চড়া

  • আপডেট সময় শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২, ৮.৩০ এএম
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

ভোগ্যপণ্যের বাজারে চিনি ও আট-ময়দার প্রকট সংকট। অনেক দোকানেই মিলছে না এসব নিত্যপণ্য। আবার যে দোকানে মিলছে, সেখানে দামও অনেক চড়া। এক কেজি চিনির দাম এখন ১২০ টাকায় ঠেকেছে। যা দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড। এ ছাড়া এক কেজি আটার দাম ৬৫ এবং ময়দার দাম ঠেকেছে ৭৫ টাকায়। অন্যদিকে বাজারে চালের দামও নতুন করে বেড়েছে আরেক দফা। তবে বাজারে শীতের সবজি ভরপুর উঠায় দাম কিছুটা কমেছে। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারে এ চিত্র দেখা যায়।

বাজারে প্রধান প্রধান প্রায় সবধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এরমধ্যে আবার বাড়তি দামেও মিলছে না কোনো কোনো পণ্য। সেগুলো কোথাও আছে, কোথাও নেই। এ তালিকায় রয়েছে চিনি, সয়াবিন তেল, আটা ও ময়দা। পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানগুলোতেও দেখা গেছে একই চিত্র।

দেখা যায়, ক্রেতারা কোনো একটি দোকানে আটা-ময়দা পেলেও হয়তো চিনি পাচ্ছেন না। আবার কোথাও চিনি মিললেও সেখানে নেই সয়াবিন তেল কিংবা আটা। আবার কোথাও এসব পণ্যের মোড়কজাত দুয়েকটি প্যাকেট থাকলেও নেই খোলা পণ্য। এ কারণে কাক্সিক্ষত পণ্য পেতে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কেউ আবার বাধ্য হয়ে বেশি দামেই পণ্য কিনছেন। বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, একেক দোকানে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। কোথাও রূপচাঁদার ২ লিটারের তেলের বোতল ৩৬০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে, আবার কোথাও একই তেল ৩৮৪ টাকা। একই পরিমাণ তেল বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের দাম ৪১০ টাকাও বিক্রি হতে দেখা গেছে। তীর ব্র্যান্ডের এক লিটার বোতলজাত তেলের দাম ১৭৮ টাকা আবার কোথাও একই তেল ১৯২ টাকাও লেখা বোতলের গায়ে।

বিক্রেতারা বলছেন, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে তিন দফা তেলের দাম বেড়েছে। একেক দোকানে তেলের দাম একেক রকম।

বাজারের এক ক্রেতা বলেন, তেল, চিনি ও আটা-ময়দা যেসব পণ্যের সংকট রয়েছে, সেগুলোর বাজার কয়েকটি কোম্পানির দখলে। তারা বিশ্ববাজার এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে অজুহাত করে বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ানো হয়েছে বিশ্ববাজারে তা ততটা বাড়েনি।

তিনি বলেন, এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে সরকার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলেই তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তারা একদম নাজেহাল।

অন্যদিকে খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। তিন দিন আগেও এ চিনির দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা কম ছিল। আর প্রতি কেজি খোলা আটা ৬৫ টাকার নিচে মিলছে না। যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, গত এক বছরের ব্যবধানে বাজারে আটার দাম ৭৯ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১২ দশমিক ১৫ শতাংশ।

শুধু আটা নয়, একইভাবে ময়দার দামও বেড়েছে বাজারে। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে।

টিসিবি বলছে, বছরের ব্যবধানে ময়দার দাম ৭০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১৬ শতাংশ।

দোকানিরা বলছেন, প্যাকেটজাত আটার সরবরাহ কিছুটা কম। এক সপ্তাহ আগে খুচরা ব্যবসায়ীরা ডিলারদের কাছ থেকে যেসব আটা ও ময়দা সংগ্রহ করেছেন, সেগুলোই বিক্রি করছেন দোকানিরা। অন্যদিকে পাইকারি বাজারে খোলা আটা-ময়দার চড়া দামের কারণে অনেকে রাখছেন না।

বাজারে মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া ডিমের ডজন ১৪০-১৪৫ টাকা। এ দুই পণ্য আটকে আছে বাড়তি দামে।

এ ছাড়া শীতকালীন সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বিভিন্ন সবজির দাম। আগের সপ্তাহে ৬০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়াও ১০ থেকে ২০ টাকা কমে প্রতি কেজি বেগুন ৪০ থেকে ৫০ , ঢ্যাঁড়স ৪০ থেকে ৫০, করলা ৫০ থেকে ৬০ , পটোল ৫০ , মুলা ২০ থেকে ৩০ , শিম ৫০ থেকে ৬০, শসা ৬০ থেকে ৭০ ও মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com