এফবিডি ডেস্ক॥
পোশাক কারখানার অগ্নিনিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন পোশাক শ্রমিকরা। তারা বলছেন, অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের লাশ বাবদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। একটি জীবনের মূল্য ১০ হাজার হতে পারে না। পোশাক কারখানার আগুন বন্ধ করতে হবে। তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকাণ্ডে হতাহতরা এখনও ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে।
শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত ৮ম আন্তর্জাতিক ফায়ার, সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো ২০২২ অনুষ্ঠানে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন পোশাক শ্রমিকরা। ফায়ার ইলেকট্রনিক্স সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইসাব) এই মেলার আয়োজন করে। সেমিনারে দর্শক সারি থেকে নানা ধরনের প্রশ্ন করা হয়। সবার একটাই কথা যেভাবেই হোক এই অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহতা থেকে বাংলাদেশ ও দেশের পোশাক খাতকে বাঁচাতে হবে। বারবার অগ্নিকাণ্ড থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে, যাতে করে একটা পোশাক শ্রমিকের প্রাণ আর না যায়।
পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন সরানোরও দাবি জানানো হয়। গাজীপুর থেকে আসা পোশাক শ্রমিক রবিন হোসেন বলেন, বারাবার পোশাক কারখানায় আগুন লাগে। আর বিনিময়ে আমাদের নিহতদের লাশ বাবদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। একটি জীবনের মূল্য ১০ হাজার হতে পারে না। পোশাক কারখানার আগুন বন্ধ করতে হবে। আমাদের কাজের জায়গা যেকোনো মূল্যে নিরাপদ করতে হবে। আমরা মানুষ, আমাদেরও জীবনের মূল আছে।
এক ফায়ার সার্ভিস কর্মীর দাবি, অধিকাংশ পোশাক কারখানায় ফায়ার সেফটির কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি টেকনিশিয়ান না। তারা জানে না আগুন লাগলে কীভাবে নেভাতে হবে। এখানে টেকনিশিয়ান লোক নিয়োগ দিতে হবে। দরকার হয় এদের যথাযথভাবে ট্রেনিং দিতে হবে।
পুরান ঢাকা থেকে আসা কবির হোসেন বলেন, পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন এখনও সরেনি। ফলে আমরা শঙ্কা নিয়ে রাতে ঘুমাতে যাই। যত্রতত্র যাতে করে ভবন না নির্মাণ করা হয় সেই বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।সেমিনারে নগরবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, বর্তমানে ফায়ার সেফটির কোনো বিকল্প নেই। এই বিষয়ে শিল্প কারখানা রেগুলার মনিটরিং করতে হবে। সরকার বিষয়টি অনুধাবন করছে বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) উদ্যোগ নিচ্ছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে কাজ করবে। সচেতনার জন্য ইনফোর্স করতে হবে।
ইসাবের পরিদর্শক ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেকগুলো ভবন, শিল্পকারখানা ও কেমিক্যাল গোডাউন আছে এমন এলাকা পরিদর্শন করেছি। এ ছাড়া অনেক পোশাক কারখানাও ভিজিট করেছি। পোশাক কারখানার তুলনায় আবাসিক এলাকার ভবনগুলো ফায়ার সেফটি নিয়ে উদাসীন। পোশাক কারখানাগুলো বায়ারদের চাপে ফায়ার সেফটি নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু আবাসিক ভবনের মালিকদের চাপ দেওয়ার নেই। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে শতর্ক ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজউক যেন এই বিষয়ে যথযথ পদক্ষেপ নেয়।
উল্লেখ্য , তিন দিনব্যাপী ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো গতকাল থেকে বিআইসিসিতে শুরু হয়েছে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকংসহ ৩০টিরও বেশি দেশের ১৬০টিরও বেশি ব্র্যান্ড অংশ নিয়েছে।