সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ অপরাহ্ন

অবরোধের দ্বিতীয় দিন: চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২২, ৮.৫৩ এএম
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম ব্যুরো

ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করাসহ ১০ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিনও চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। লাগাতার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন সোমবার চট্টগ্রামের ১৭টি নৌঘাটে কোনো ধরনের পণ্য পরিবহন হচ্ছে না। এতে চট্টগ্রাম থেকে নৌরুটে পণ্য পরিবহন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

নৌযান শ্রমিকরা বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন। তবে নৌ অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে ধর্মঘট তুলে নিতে। তারা নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা আশা করছেন, আজকের মধ্যেই বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের পরিচালক বদরুল হাসান লিটন  বলেন, ধর্মঘট তুলে নিতে আমাদের মহাপরিচালক নৌযান শ্রমিক এবং জাহাজ মালিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিকরা যাতে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হন, মালিকরাও যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়—দুটি বিষয় মাথায় রেখেই একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ডিজি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, আমরা আশা করছি আজকের মধ্যে এই স্থবিরতা কেটে যাবে। লাইটার জাহাজ একদিন বন্ধ থাকলে নৌবাণিজ্য কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তাই এই সংকট নিরসনে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি।’

এর আগে ১০ দফা দাবিতে শনিবার রাত ১২টা থেকে কর্মরিবতি শুরু করে সারা দেশের নৌযান শ্রমিকরা। তাদের কর্মবিরতির কারণে গত দুই দিন ধরে সব ধরনের লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘটের কারণে গত দুই দিন ধরে দেশের বিভিন্ন রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

নৌ শ্রমিকদের অন্যতম দাবি হলো তাদের বেতন-ভাতা ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা করতে হবে। কর্মস্থলে মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ করা, শ্রমিকদের নিয়োগপত্র প্রদান করা, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, ভারতগামী জাহাজ শ্রমিকদের সেদেশের ল্যান্ডিং পাস সরবরাহ করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্প বাতিল করা, লাইটার জাহাজকে ডব্লিউটিসির সিরিয়াল অনুযায়ী পণ্য পরিবহনে বাধ্য করা, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে যাতায়াতে তৈরি করা চড়পাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করা। এ ছাড়া নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধ করা।

নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য চট্টগ্রাম লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল হক বলেন, গতকালের মতো আজও আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহন হচ্ছে না। বন্দরের বহির্নোঙরের পাশাপাশি ১৭টি ঘাট থেকে সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ আছে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ধারাবাহিকভাবে এ কর্মসূচি পালন করে যাব।’

অবরোধের কারণে লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছেন দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকরা। অবরোধের কারণে গত দুই দিন ধরেই আমদানি পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসা কোনো জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে না। একইভাবে বহির্নোঙরে রপ্তানি পণ্য জাহাজিকরণও বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় শিপিং এজেন্টের ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার গম, চিনি, চাল, পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ৩২টি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছবে। পরদিন মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) আরও ১০টি জাহাজ আসবে। নৌযান শ্রমিকরা ধর্মঘট তুলে না নিলে এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।

বন্দরের নৌবিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বন্দরের বিভিন্ন জেটিতে ১৯টির মতো জাহাজ বার্থিং করা আছে। সোমবার (২৮ নভেম্বর) ৯টি জাহাজ মুভমেন্ট করবে। এর মধ্যে ৪টি জাহাজ জেটি থেকে বহির্নোঙরে যাবে। এর বিপরীতে ৫টি জাহাজ বহির্নোঙরে থেকে পণ্য খালাসের জন্য বন্দরের বিভিন্ন জেটিতে নিয়ে আসা হবে।

এ বিষয়ে জানতে বন্দর সচিব ওমর ফারুককে একাধিকবার মোবাইল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com