রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মুন্সীগঞ্জ থেকে লুট হওয়া ৩ কোটি টাকা মুল্যের ফার্নেস অয়েল সিরাজগঞ্জে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫ সিরাজগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য হেনরীর সম্পদ ক্রোকের আদেশ আ’লীগ করার সুফল ১৫ বছরে অবৈধ সম্পদের পাহাড়॥ হেনরী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অবশেষে দুদকের ২ মামলা পরিবারের জিম্মায় মুক্ত হলেন সাংবাদিক মুন্নী সাহা যমুনা রেলওয়ে ব্রীজ: পরীক্ষামুলক ট্রেন চলাচল শুরু সিরাজগঞ্জে বাসচাপায় দুই মোটর সাইকেল আরোহী নিহত সিরাজগঞ্জ পৌর আ’লীগের সহ-সভাপতি ফিলিপস কারাগারে এস আলমের সঙ্গে আর ব্যবসায়ে আগ্রহী নয় ব্যাংকগুলো, বন্ধ হয়ে গেছে তেল-চিনি কারখানা ঠিকাদারের খোঁজ নেই, ছয় বছরেও শেষ হয়নি ২২ কোটির আইটি প্রকল্পের কাজ নভেম্বরে ১৩ শতাধিক সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়

নজরদারিতে বিও হিসাব কমল ১.৭৩ লাখ

  • আপডেট সময় রবিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৩, ৮.৩৭ এএম
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

এফবিডি ডেস্ক॥

সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ২ জানুয়ারি বিওধারীর সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৯টি। যা গত এক বছরে কমে বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৬১ হাজার ৩০১টিতে। এতে এক বছরের ব্যবধানে বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩৮টি বা ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ।

নানা আলোচিত সমালোচিত ঘটনা নিয়ে শেষ হয়েছে ২০২২। বছরজুড়েই পুঁজিবাজার নিয়ে ছিল বিভিন্ন ইস্যুতে তোলপাড়। এর ভেতরে দেশের অর্থনীতির চেহারাও বদলেছে অনেকটাই। পুঁজিবাজারের টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে বিনিয়োগকারীরা অনেকটাই ভরসা হারিয়ে ফেলেছেন।

সেন্ট্রাল ডিপোজেটারি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্যমতে, সদ্য সমাপ্ত ২০২২ সালে বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩৮টি। এক বছরের ব্যবধানে এ পরিমাণ বিও হিসাব কমে যাওয়াটা স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।

সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ২ জানুয়ারি বিওধারীর সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৯টি। যা গত এক বছরে কমে বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৬১ হাজার ৩০১টিতে। এতে এক বছরের ব্যবধানে বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩৮টি বা ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেয়া বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ ও নজরদারির কারণে বিওধারীর সংখ্যাও কমেছে।

তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথম কার্যদিবস ২ জানুয়ারি সিডিবিএলে পুরুষ বিওধারীর সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ১১ হাজার ৮২৬টি। ছয় মাসের ব্যবধানে ২ জুন তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯১১টিতে। আর সেই পুরুষ বিও হিসাব বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বরে কমে দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৮৯০টিতে। এ সময়ে পুরুষ বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ২১ হাজার ৯৩৬টি বা ৮ শতাংশ।

এদিকে নারী বিওধারীর সংখ্যাও কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। বছরের প্রথম মাসের একই কার্যদিবসে নারী বিওধারীর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৭ হাজার ৩৬১টি। যা ছয় মাস পর জুনের একই কার্যদিবসে বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৮ হাজার ১৯৯টিতে। কিন্তু তা বছরের শেষে ডিসেম্বরের একই কার্যদিবসে কমে দাঁড়ায় ৪ লাখ ৫৫ হাজার ২৪টিতে। এতে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে নারী বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ৫ হাজার ৩৩৭টি বা ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ।

সিডিবিএলের প্রাপ্ত থেকে দেখা যায়, গত বছরের শুরু থেকে মাঝ পর্যন্ত বিওধারী বা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়লেও তা বছরের শেষে অনেক কমেছে। বছরের শেষ সময়টাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নেয়া বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের পর বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজার ছেড়েছেন।

বিএসইসি ও আর্থিকখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে দীর্ঘ মতভিন্নতাও দূর হয়েছে এ বছর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রক্ষণশীল নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি আর আভাসে সীমাবদ্ধ নেই। তারা ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে নানা নির্দেশও দিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের এক যুগের দাবি মেনে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটেডের গণনা শেয়ারের ক্রয়মূল্যে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু এসবের কিছুই বিনিয়োগকারীদের হতাশা ঠেকাতে পারেনি। বৈশ্বিক আর দেশের অর্থনীতি নিয়ে নেতিবাচক প্রচারেই উৎকণ্ঠিত ছিল তারা। যার প্রভাব সুস্পষ্ট। এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দুই লাখ বিওধারী বাজার ছেড়েছেন।

প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ:

এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দুই লাখ বিও হিসাব কমার কারণ হিসেবে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা।

দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের অভাবে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বছরজুড়েই কৃত্রিমভাবে বাজার রক্ষার চেস্টা করা হয়েছে। বাজারকে রক্ষা করতে দীর্ঘমেয়াদী কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বিএসইসি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, এসব পদ্ধতিতে বাজার রক্ষা করা যায়না।’

‘বাজার রক্ষা করতে দরকার দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ। নীতিগত পরিবর্তন আনলে বাজার আবারও তার আপন গতিতে ফিরবে’- যোগ করেন এ পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ।

ব্রোকারেজ হাউজগুলোও বলছে একই কথা। একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের শেষ দিকে একটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগকারী বাজার থেকে চলে গেছে। অনেকদিনের পুরনো বিনিয়োগকারীও বছরের শেষ সময়টাতে বাজার থেকে বেরিয়ে গেছে।

ইসলামী ব্যাংক ‍সিকিউরিটিজের এমডি ও সিইও জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বছরের শুরুর ‍দিকে বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়লেও তা শেষের দিকে কমার কারণ হচ্ছে, নতুন নিয়ম অনুযায়ী একজন বিওধারীকে অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা রাখতে, আর দ্বিতীয়ত জুনের শেষে নতুন করে বিও হিসাব নবায়ন করতে একটা ফি দিতে হয়। এ দুইটা কারণে দেখা গেছে জুনের পর থেকেই বিও হিসাবের সংখ্যা কমতে শুরু করে।’

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিওতে ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা রাখার নিয়মের কারণে তা অনেক বিনিয়োগকারীর সামর্থ্যের বাইরে চলে যাওয়া তারা অনেকেই বাজার থেকে চলে গেছেন। তবে এই এক বছরে আমাদের বিওধারীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার বেড়েছে।’

সজিব ইসলাম নামে একজন বিনিয়োগকারী বলেন, ‘বছরের শুরু থেকেই পুঁজিবাজার অনেকটা অস্থির ছিলো। বিএসইসির পক্ষ থেকে স্থির মার্কেটের কথা বলা হলেও বাজারকে স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। এই বছর বাজারকে স্থির তো দূরের কথা, বেশিরভাগ সময় নিম্নমুখীই ছিলো। বাজার রক্ষা করতে নতুন বছরে নতুন সিদ্ধান্ত নেবেন।’

কমেছে নিষ্ক্রিয় বিও হিসাব:

সিডিবিলের প্রাপ্ত তথ্যমতে, নিস্ক্রিয় বিওধারীর সংখ্যা অনেকটা কমেছে। গত বছরের ২ জানুয়ারী নিস্ক্রিয় বিও অ্যাকাউন্ট ছিলো ১ লাখ ১৭ হাজার ২০৮টি। যা বছরের শেষে ২৯ ডিসেম্বর কমে দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ১টিতে। এতে দেখা যায় বছর শেষে নিষ্ক্রিয় বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ৪১ হাজার ২০৭টি বা ৩৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।

কমেছে বিদেশি বিও হিসাব:

স্থানীয় বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি কমেছে বিদেশী বিনিয়োগকারীর বিও হিসাবের সংখ্যাও। বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বর বিদেশি বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ১১৭টিতে। যা বছরের প্রথম কার্য দিবস ২ জানুয়ারি ছিল ৮৬ হাজার ৩৬১টি। এতে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ২৩ হাজার ২৪৪টি বা ২৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।

অর্থ ছাড়া বিও হিসাব কমেছে:

বিও হিসাব আছে অথচ এতে অর্থ নেই এমন বিও হিসাবের সংখ্যাও এ বছর বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। বছরের প্রথম কার্যদিবস ২ জানুয়ারি অর্থ ছাড়া বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৬২টি। যা বছরের শেষ কার্যদিবস ২৯ ডিসেম্বর কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭০টিতে। এতে দেখা যায় এক বছরের ব্যবধানে অর্থ ছাড়া বিওধারীর সংখ্যা কমেছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৯২টি বা ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ।

এতে বোঝা যাচ্ছে, বছর শেষে যে পরিমাণ বিও হিসাব কমেছে, এরমধ্যে বেশিরভাগই ছিল অর্থ ছাড়া বিও হিসাব। যেসব বিও হিসাবে ন্যূনতম কোনো অর্থ ছিল না, সেসব বিও হিসাবই বছর শেষে অধিকাংশ কমেছে।

আড়াই বছরে সর্বনিম্ন লেনদেন:

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ১৬৯টি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পরও অংশগ্রহণ বাড়েনি বিনিয়োগকারীদের। গত সোমবার প্রথম কর্মদিবসে সূচক পতনের সঙ্গে লেনদেন নামে ২০০ কোটি টাকার নিচে।

এর আগে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ২২৭ কোটি ৭৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার। সেটি ছিল ২০২০ সালের ১৬ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন লেনদেন। তলানিতে নামলেও গত দুই বছরে লেনদেন ২০০ কোটির নিচে নামেনি, কিন্তু সোমবার হাতবদল হয় ১৯৮ কোটি ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা, যা চলতি বছরের তো বটেই, গত ২ বছর ৫ মাসে সর্বনিম্ন। এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল ২০২০ সালের ৭ জুলাই। ওই দিন হাতবদল হয়েছিল ১৩৮ কোটি ৫৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

অর্ধেকের কিছু বেশি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত আসার দিন বুধবার লেনদেন ছিল ৩৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার লেনদেন কমে ১০৫ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ৩১ দশমিক ৭২ শতাংশ। সোমবার সেটি কমল ২৮ কোটি ৯৪ লাখ ৫ হাজার টাকা বা ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com