নওগাঁ সংবাদদাতা॥
নওগাঁর মান্দায় এক ব্যবসায়ীর তিনটি গুদাম থেকে অবৈধভাবে মজুত করা দুই কোটি ৬২ লাখ টাকার খাদ্যপণ্য জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাসুদ রানা (৪৫) নামে ওই ব্যবসায়ীকে আটক করে গুদামগুলো সিলগালা করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার পরানপুর এলাকায় মজুতবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ এসব খাদ্যপণ্য জব্দ করেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে মিডিয়া সেলে জব্দ পণ্যের তালিকা প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) গোলাম মওলা।
ওই তালিকায় দেখা যায়, প্রথম গুদাম থেকে ১৩ হাজার ১৩৫ লিটার সয়াবিল তেল, ১ লাখ ২৮ হাজার কেজি (১২৮ টন) গম, ৮ হাজার কেজি ময়দা, ২৭ হাজার ১৭৫ কেজি অ্যাংকর ডাল, ৪ হাজার ৫০ কেজি চিনি, ৪ হাজার ৭০০ কেজি ছোলা, ৫ হাজার ৯২০ কেজি পামওয়েল, ১ হাজার ২০০ কেজি লবণ জব্দ করা হয়। এসব পণ্যের মূল্য এক কোটি পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
দ্বিতীয় গুদামে ৭ হাজার ৪৭৪ কেজি ময়দা, ৫ হাজার ৫৭৫ কেজি লবণ, ৩ হাজার ৬৬৭ লিটার সরিষার তেল, ১ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কেজি (১০৩ টন) গম, ৫ হাজার ৪০৪ কেজি পামওয়েল, ৪ হাজার ৫৩ কেজি সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়। এসব দ্রব্যের মূল্য এক কোটি ৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
এছাড়া তৃতীয় গুদাম থেকে ১ হাজার ৬০০ কেজি মুড়ি, ২৩ হাজার ৭৫ কেজি অ্যাংকর ডাল, ৯০০ কেজি খৈল, ১৭ হাজার ২৯০ কেজি ভুসি, ৫ হাজার ৮০০ কেজি ব্রয়লার ফিড, ১৩ হাজার ৬৪০ কেজি গোখাদ্য, ৩৭৫ কেজি ছোলা, ৪ হাজার ৫৭৫ কেজি মসুর ডাল, ৮ হাজার ৭০০ কেজি চিনি জব্দ করা হয়। এসব পণ্যের দাম ৪৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যায় পরানপুরে মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মাসুদ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ গম, সয়াবিন তেল, আটা, চিনি, ছোলাসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য জব্দ করা হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, ওই ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। অবৈধভাবে খাদ্যপণ্য মজুতের দায়ে ওই ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে নিয়মিত মামলা হবে। মান্দা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে এই মামলা করবেন।
এদিকে মিডিয়া সেলে পাঠানো বার্তায় নওগাঁর জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা বলেন, পবিত্র রমজান মাস কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যপণ্য মজুত করে মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা করছেন। মালামালগুলো মাসুদ এন্টারপ্রাইজের নামে কেনা হলেও ওই নামে তার কোনো ব্যবসায়িক লাইসেন্স নেই। মজুত করে বেশি দামে বিক্রি করাই তার মূল ব্যবসা।
ডিসি আরও বলেন, এ ধরনের মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এর আগে গত সাত দিনে অবৈধভাবে ধান-চাল মজুতের দায়ে নওগাঁয় ৩৯টি প্রতিষ্ঠানকে ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।