শরীয়তপুর সংবাদদাতা॥
শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিলাসপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও তার প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউপির সারেংকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- শাহাবুদ্দিন সারেং, মো. আরশাদুল, সৈকত সরদার, হাজেরা বেগম ও আকাশ হাওলাদার।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী এবং তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ২৭ মার্চ দুপক্ষের সংঘর্ষে বোমার আঘাতে সজীব মুন্সী নামে এক যুবক আহত হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বুধবার আবারো দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এ সময় তারা সারেংকান্দি এলাকায় ফসলি জমিতে নেমে একে অপরকে লক্ষ্য করে হাতবোমা (ককটেল) ছুড়তে থাকে। ককটেলের শব্দে ভারী হয়ে ওঠে আশপাশ। এ ঘটনায় ৫ জন আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত ও আকাশকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এছাড়া দুপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবর অভিযোগ করে বলেন, কুদ্দুস বেপারীর লোকজন মঙ্গলবার আমাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, ‘বাবার জন্ম হয়ে থাকলে সবার সামনে গিয়ে মারামারি করিস। পোলাপান সামনে দিয়ে মারামারি করিস না। আগামীকাল সকালে শুরু হবে।’ এ বিষয়ে পুলিশকে জানিয়েছি। পরে আজ কুদ্দুস বেপারীর লোকজন আমার লোকজনের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে ও আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, জলিল মাদবর মারামারি করার জন্য কয়েক গ্রাম থেকে লোকজন এনে আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।
জাজিরা থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর ধরে বিলাসপুর ইউপিতে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হামলা-মামলা চলছে। তারই জেরে বুধবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই দুপক্ষের অন্তত চারজন লোক আহত হয়েছেন। তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।