রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৩ অপরাহ্ন

চলতি বছর বন্যায় সিরাজগঞ্জে কৃষিতে ক্ষতি ৬৩ কোটি টাকা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪, ৪.১১ পিএম
  • ২১ বার পড়া হয়েছে
ছবি: দ্য ডেইলী স্কাই

স্টাফ রিপোর্টার॥
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে চলতি বছর সৃষ্ট বন্যায় সিরাজগঞ্জে কৃষকদের ৬২ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ১২৬ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এছাড়াও বন্যার পানিতে পাট, তিল, পোটল, মরিচ আউশ, আমন বীজতলা ও বেগুনসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়াতে কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কৃষি বিভাগ।

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় এবারের বন্যায় ৩৭ হাজার ৪৬ জন কৃষকের বিভিন্ন ধরনের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিন সপ্তাহের এ বন্যায় জেলায় ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ দশমিক ১ হেক্টর ফসলি জমি। এসব ফসলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ১২৬ টাকা।

সিরাজগঞ্জ কাওয়াকোলা ইউনিয়নের মরিচ চাষী রহমান আলী বলেন, “এ বছর এক বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছিলাম, কিন্তু বন্যার পানিতে সেগুলো তলিয়ে গাছগুলো পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। মরিচের গাছগুলো থাকলে অনেক টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারতাম, যা সংসারে আয় বলে গণ্য হত।”
কাজীপুর চর এলাকার বাসিন্দা মোসলিম উদ্দিন বলেন, “দুই বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করেছিলাম। কিন্তু এ বছর বন্যার পানিতে সেগুলো তলিয়ে সম্পূর্ন্ন ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আবার নতুন করে আবাদ শুরু করতে অনেক টাকার প্রয়োজন।”

একই এলাকার আফসার আলী বলেন, “আমি দুই বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছিলাম। বন্যার পানিতে সব পচে নষ্ট হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে সংসার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে এখন অনেক চিন্তার মধ্যে রয়েছি।”

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম ‘দ্য ডেইলী স্কাই’ বলেন, “কয়েকদিনের ব্যবধানে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্ট হয়। আবার দুই সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর পানি কমছে। বর্তমানে পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলায় খুব শীঘ্রই বড় ধরনের বন্যার শঙ্কা নেই।”

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, “চলতি বছর বন্যায় যে সকল কৃষকের ফসল নষ্ট হয়েছে, সেই সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা করা হবে।”

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর ‘দ্য ডেইলী স্কাই’ কে জানান, “চলতি বছর বন্যায় জেলার ৩৭ হাজার ৪৬ জন কৃষকের ৬২ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ১২৬ টাকা ফসলের ক্ষতিসাধন হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে ও একইসঙ্গে তালিকা তৈরী করে কৃষকদের সহায়তার কথাও বলা হয়েছে। আশা করছি কৃষকেরা দ্রুত সহায়তা পাবে।”

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com