সিরাজুল ইসলাম শিশির॥
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় যমুনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বাঁধের প্রায় ৭০ মিটার এলাকা। ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দেয় চরম আতঙ্ক।
বাঁধটির মুল অংশ ধসে গেলে বন্যা কবলিত হবে বেশ কয়েকটি গ্রাম ও লোকালয়। ফলে ফসল ও বাড়ীঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় কাজিপুর উপজেলার মেঘাই অংশের তীর রক্ষা বাঁধে আকস্মিক ভাবে ধস শুরু হয়। সাথে সাথে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। খবর পেয়ে রোববার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বগুড়া কার্য্যালয়ের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম এবং সিরাজগঞ্জ কার্য্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মোকলেছুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ধসের বিস্তৃতি ঠেকাতে রোববার সকাল থেকে পাউবো’র তত্বাবধায়নে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়। কিন্তু নদীর তীব্র স্রোতে ব্যাহত হয় ডাম্পিং কাজ, জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জ দপ্তর ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর ভাঙনের কবল থেকে কাজিপুর উপজেলা ও জনপদ রক্ষায় ২০১৩ সালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এ বছর বন্যার শুরুতে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির পর থেকে স্পারটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়। তবে কয়েকদিন ধরে যমুনার পানি কমতে থাকায় তলদেশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় এই ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ।
এতে করে নদীর পার্শ্ববর্তী ঘরবাড়ি হুমকির সম্মূখীন হয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মোকলেছুর রহমান ‘দ্য ডেইলী স্কাই’ কে জানান, “শনিবার সন্ধ্যা থেকে কাজিপুর উপজেলার মেঘাই পুরাতন বাঁধে হঠাৎ করে এ ভাঙ্গন দেখা দেয়। নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধের তলদেশ থেকে মাটি সরে যাওয়ার ফলে এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে পাউবো ভাঙ্গন রোধে এবং জনগণের জানমাল রক্ষা কল্পে কঠোর হস্তে কাজ করায় বর্তমানে ভাঙ্গন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে এসেছে। ফলে এখন আর আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।”
তিনি আরও বলেন, “সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে মেরামত কাজ তদারকি করছেন। ফলে, ভাঙ্গন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।”