শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
যমুনা নদীর ভাঙনরোধে ক্রসবার নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব শিক্ষাঙ্গণ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা চলনবিলের কৃষকদের স্বপ্ন এখন পানির নিচে যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার গাড়ি পারাপার: টোল আদায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ সিরাজগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত, আহত তিন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত দুই ফুট বাঁধই ভরসা, আতঙ্কে নিদ্রাহীন রাত কাটে খুলনা উপকূলবাসীর খুলনা অঞ্চলের ভরত ভায়না দেউল হতে পারে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র খুলনায় সড়ক বিভাগের বাধায় বন্ধ কেসিসির ৭ মোড়ের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ সাবেক এমপি আজিজের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

তাড়াশে নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি : নৌ-চলাচল বন্ধ

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৪, ৬.৩১ পিএম
ছবি: সংগ্রহীত

তাড়াশ সংবাদদাতা॥

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গুমানী নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহের জায়গা সংকুলন করে সুতিজাল স্থাপন করে মাছ ধরায় নিন্মাঞ্জলে বোরো ধানের চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা ভুগছে কষ্ট। তাছাড়া নদীতে ণ নৌ চলাচলের বাধাবিঘ্নর সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের উপর দিয়ে বন্যার পানি গুমানি নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসছে। ওই নদীর আক্কেলের ঘাট সংলগ্ন প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তি বাঁশের ঘের তৈরি করে অবৈধ সোঁতিজাল দিয়ে মাছ ধরছে। এতে করে পানি প্রবাহের বাধাসহ নৌ চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। চলনবিলের পানি এ নদী দিয়ে নিষ্কাষন না হওয়ায় শত শত বিঘা জমিতে বোরো চাষের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রশাসন এখন পর্যন্ত কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

স্থানীয়রা জানায়, আত্রাই নদীর শাখা নদী গুমানী। বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের মানুষ এ নৌপথে তাড়াশ উপজেলার ধামাইচ হাট, গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় হাট, বিয়াঘাট হাট, সিংড়া উপজেলার সিংড়ার হাট, আত্রাই উপজেলার আত্রাই হাট ও নওগাঁ জেলার আহসানগঞ্জ হাট থেকে বিভিন্ন পণ্য আনা নেওয়া করে থাকেন। এ ছাড়াও তাড়াশ ও গুরুদাসপুর উপজেলার চলনবিল অংশের বিভিন্ন মাঠ থেকে দ্রুতবেগে পানি নিষ্কাশন হয় এ নদী দিয়েই।

সম্প্রতি নদীতে পানি কমে যাওয়ায় মাসখানেক আগে তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের নাদোসৈয়দপুর এলাকার আক্কেলের ঘাট অংশে স্থানীয় প্রভাবশালী বিন্নাবাড়ি গ্রামে কোবাদ আলীর ছেলে মো. বকুল ও নওখাদা গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে খায়রুল বাঁশ, বাঁশের চাটাই, পলিথিন ও লাইলনের নেট জালের সাহায্যে নদীর এপার থেকে অন্য পার পর্যন্ত মাটি সংযোগে বাঁধ নির্মাণ করে সোঁতিজাল স্থাপন করে অবাধে মাছ ধরছে।

ফলে একদিকে যেমন বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ধরা পরছে। অন্যদিকে বন্ধ হয়ে গেছে নৌকা চলাচল। আর জলাবদ্ধতার কারণে কৃষক সময় মত বোরো ধান রোপন করতে পারচ্ছেন না।

অপরদিকে চলনবিলের তাড়াশ, গুরুদাসপুর ও সিড়া উপজেলার প্রায় সাতটি ইউনিয়নের বোরোর চাষের জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় জমি প্রস্তুত করতে কৃষকের সমস্যা হচ্ছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে।

তাড়াশ উপজেলার নাদোসৈয়দপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আলী আক্কাস জানান, নদীতে বাঁধ দিয়ে সোঁতিজাল পাতায় নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সোঁতিজালের কারণে ভাটিতে ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি হয়ে নদীর পাড় ভেঙে যাচ্ছে।

ফলে নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সড়কপথে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করতে তাদেরকে প্রায় দ্বিগুণ টাকা গুনতে হচ্ছে। এতে করে তারা ক্ষতির মুখেই পড়েছেন। তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের রফিকুল, ভেটুয়া গ্রামের সোলায়মান, জাহাঙ্গীর, রফিকুল, গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশা গ্রামের রমিজুল, মোক্তার, সাত্তার বামনবাড়িয়া গ্রামের সাইফুল, শহিদুল, হরদামা গ্রামের ফেরদৌস, শফিকুল, সিংড়া উপজেলার কাউয়াটিকরি গ্রামের হাসিনুর, দুলাল, সাব্বির অভিযোগ করে বলেন, বিলের পানি নামে গুমানী নদী দিয়ে। কিন্তু সেখানে সোঁতিজাল দিয়ে মাছ ধরার কারণে বিল থেকে পানি নামছে ধীর গতিতে।

এ কারণে বোরো আবাদ করতে তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যার ফলে বোরো চাষ দেরীতে হলে ধান পাকার সময় উত্তরের বৃষ্টির পানির কারণে বোরো ধান ডুবে যাওয়ার আশংকা পরে কৃষক। এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগে অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সরেজমিনে গুমানী নদীর আক্কেলের ঘাট এলাকায় গিয়ে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। দেখা যায় নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে সোঁতিজাল স্থাপন করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বিভিন্ন অংশে যেটুকু গভীরতা থাকে তা থেকেই মা মাছ বংশ বিস্তার করে থাকে। কিন্তু সোঁতিজালের কারণে মা মাছ ধরা পরছে এবং মা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে সোঁতিজালের মালিক বকুল ও খায়রুলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা সম্ভব হয়নি। পরে বকুলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।

এবিষয়ে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পানি দুত্র নিস্কাষনেল জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মশগুল আজাদ বলেন, এখন পর্যন্ত তিনি কোনো অভিযোগ পাননি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে ভোরের কাগজকে বলেন, ‘আমাকে এ উপজেলা থেকে বদলি করা হয়েছে। পরবর্তীতে যিনি আসবেন তিনি আইনগত ভাবে দেখবেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, অদৃশ্য কোন শক্তির ছত্রছায়ায় তারা মাত্র দু’জন ব্যক্তিই সুতিজাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরে যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com