সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২২ অপরাহ্ন

দৃশ্যমান শেখ হাসিনা সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৪, ৫.১২ পিএম
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগ্রহীত

ডেস্ক রিপোর্ট॥

দেশে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থ বারের মতো সরকার গঠন করেছে শেখ হসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগ। অংশগ্রহণমূলক এই নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতিতে সাফল্যের যুক্ত হয়েছে নতুন পালক। এখন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সফলভাবে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার।

পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব গাঢ় করতে সরকার উদ্যোগী। তবে শুরুটা হচ্ছে এশিয় প্রতিবেশীদেরকে দিয়েই। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ভাইস মিনিস্টার পদমর্যাদার কর্মকর্তা সুন হাইয়ানের ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাক্ষাৎও হয়েছে। মেগাডেভেলপমেন্ট পার্টনার এবং স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রগতির পথ মসৃণ করতে চীনের আরো সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের আমন্ত্রণে ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ উগান্ডাতে ন্যাম ও সাউথ সামিটে যোগ দিয়েছেন। এর আগে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরপরই বিভিন্ন দেশ দ্রুততার সঙ্গে নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানাতে থাকে বিভিন্ন দেশ।

আওয়ামী লীগ সরকারের নতুন মেয়াদে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে আরো বেশি গতিশীলতা আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।

গেল ১৫ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি বলেন, এ সম্পর্ক দুই দেশের উন্নয়ন অংশীদারিত্বে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে পারবে।

নির্বাচনে আবারো বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত, চীন, মিশর, আলজেরিয়া, ইতালি, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ, জাতিসংঘ, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মিসর, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, লুক্সেমবার্গ, জাপান এবং ইউএনডিপিসহ আরো অনেক দেশ ও সংস্থা।

তবে সবার নজর কাড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বাণিজ্য সম্প্রসারণ কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কাজ করবে বলে জানা তিনি।

১৭ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতের পর তিনি জানান, দুই পক্ষের জন্যই জরুরি জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

শেখ হাসিনাকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার অভিনন্দন জানানোও রাজনীতিতে বেশ আলোচিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ এই মিত্র দেশটির প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং পারস্পরিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন।

১৮ জানুয়ারি গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। গ্লোবাল গেটওয়ে সুবিধার আওতায় পরিবেশ, সুশাসন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ বিদ্যমান যে সুবিধা পাচ্ছে তা আগামী দিনে আরো জোরদার হবে বলে জানিয়েছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। তিনি বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেওয়ারও অঙ্গীকার করেন।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো অভিনন্দন বার্তায় জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন ও অন্যান্য সব অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এসব দেশের মধ্যে ভারত, রাশিয়া, চীন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশসহ অনেক দেশকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগ থেকেই নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করতে দেখা গেছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অবস্থান ছিলো নিরপেক্ষ। আর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, জাপানসহ আরো কয়েকটি সম্পদশালী দেশ মধ্যপন্থি অবস্থান নিয়েছিল। ভবিষ্যতে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকার এসব বিবেচনায় নিতে পারে। তবে বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক দর্শনের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণকারী দেশগুলো সম্পদশালী ও ক্ষমতাশালী। এটাও আওয়ামী লীগ সরকারকে বিবেচনায় রাখতে হবে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তবে ভূরাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এখন এশিয়ায় তথা পৃথিবীতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা ঐতিহাসিক। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক গুরুত্ব রাখে। বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগকারী রাশিয়া ও চীন, বড় রফতানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য। বাংলাদেশের রেমিটেন্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বড় শ্রম বাজার ও জ্বালানির উৎস মধ্যপ্রাচ্য। জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। এসব দেশ যেহেতু বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী, তাই যত দ্রুত সম্ভব সম্পর্ক গাঢ় করে বাংলাদেশ সুযোগ কাজে লাগাবে নিশ্চয়ই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com