রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ অপরাহ্ন

মুন্নু ফেব্রিক্সের লভ্যাংশ নিয়ে প্রশ্ন !

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮.৪৭ এএম
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

এফবিডি ডেস্ক॥

দূর্বল ব্যবসা এবং পুঞ্জীভুত লোকসান সত্ত্বেও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মুন্নু ফেব্রিক্সের পর্ষদ ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধের ব্যবসায় অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিরীক্ষক। তবে ওই লভ্যাংশকে কেন্দ্র করে শেয়ার দর বৃদ্ধির পরে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, মুন্নু ফেব্রিক্সের ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২১) শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ০.০৫ টাকা। এছাড়া কোম্পানিটির ২১ সালের ৩০ জুন পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ছিল ২৪৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এই অবস্থায় কোম্পানিটির পর্ষদ ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে শেয়ারপ্রতি ০.১০ টাকা করে অন্তর্বর্তীকালীন (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। অথচ কোম্পানিটির বিগত ৫ বছরে কোন চূড়ান্ত বা অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ দেওয়ার রেকর্ড নেই। যাতে কোম্পানিটির হঠাৎ করে পূঞ্জীভূত লোকসান সত্ত্বেও মুনাফার থেকে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করা সঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

কোম্পানির ব্যবসার সঙ্গে লভ্যাংশ যৌক্তিক না হলেও উদ্যোক্তা/পরিচালকদের সঙ্গে শেয়ার ব্যবসাটা খুবই মানানসই ছিল। তাদের গত ২৫ জানুয়ারি লভ্যাংশ ঘোষণার খবর আগেই বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যাতে করে ১৯ জানুয়ারি শেয়ারটি টানা বেড়ে ২৫.৬০ টাকায় উঠে যায়। এরপরে শেয়ারটির দর কমে যায়। যাতে করে আনুষ্ঠানিক শেয়ার বিক্রি থেকে পিছিয়ে আসে কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা। তবে বেনামের শেয়ার ব্যবসায় ঘোষণা দিতে না হওয়ায় আড়ালে থেকে যায় প্রকৃত অসৎ উদ্দেশ্য।

এরপরে তারা শেয়ারটির আরেক দফায় টানা দর বৃদ্ধি ঘটায় ৭ জুন থেকে। যে শেয়ারটি ওইদিনের ২০.২০ টাকা থেকে ১৬ জুন ২৯.২০ টাকায় উঠানো হয়। এরমধ্যে ১৪ জুন আসে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের কাঙ্খিত শেয়ার বিক্রির ঘোষণা। তারা ২০ জুনের মধ্যে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার প্রতিটি গড়ে ২৬.৮৯ টাকা করে মোট ১৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন।

যে শেয়ারটি এখন ২৪.১০ টাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। যে দরে ক্রেতা পাওয়া যায় না। অবশ্য ডিএসইর অনুসন্ধানে আগেই শেয়ারটির দর বৃদ্ধির কোন কারণ নেই বলে জানানো হয়েছিল।

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে নগদ প্রণোদনা পাওয়া যাবে হিসেবে আর্থিক হিসাবে ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা দেখিয়ে আসছে। কিন্তু এ বিষয়ে বিস্তারিত কোন তথ্য বা ডকুমেন্টস নিরীক্ষককে দিতে পারেনি মুন্নু ফেব্রিক্স কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সরকারের কাছ থেকে ফেরতযোগ্য আয়কর হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ১ কোটি ১২ লাখ দেখিয়ে আসলেও তার বিপরীতে কোন ডকুমেন্টস দেখাতে পারেনি। এমনকি সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসেবে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা দাবি করলেও এরমধ্যে ১ কোটি ৫ লাখ টাকার কোন বিস্তারিত তথ্য বা ডকুমেন্টস দেখাতে পারেনি।

মুন্নু ফেব্রিক্সে ৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকার ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) রয়েছে। এরমধ্যে আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা অন্তর্ভূক্ত আছে।

কিন্তু ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ি, অর্থবছর শেষ হওয়ার ৯ মাসের মধ্যে ফান্ড বিতরনের বিধান রয়েছে। কিন্তু ওই ফান্ড কর্মীদের মধ্যে বিতরন না করে তাদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন মুন্নু ফেব্রিক্স কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ওই ফান্ডের বিপরীতে সুদও গণনা করে না বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া মুন্নু ফেব্রিক্সের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১১৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৫৯.৩২ শতাংশ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com