নিজস্ব প্রতিবেদক॥
নানাভাবে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার, খোলা বাজারে অবৈধভাবে ডলার কারসাজি ও বিক্রি রোধে বিগত কয়েক মাস থেকেই কাজ করছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরই মধ্যে হুন্ডি চক্রের সঙ্গে যুক্ত ১৬ জনকে আটকও করেছে। এবার মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কাছে এসব হুন্ডি ব্যবসায়ী, খোলা বাজারে ডলার বিক্রি ও কারসাজির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের তথ্য চেয়েছে পুলিশের এই তদন্ত সংস্থা। সিআইডির এমন আহ্বানে সাড়া দিয়েছে মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন। বেশ কিছু অবৈধ হুন্ডি ও ডলার ব্যবসায়ীর তালিকা করে আনুষ্ঠিকভাবে সিআইডির হাতে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ী নেতারা।
এ লক্ষ্যে রোববার সিআইডি ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের সঙ্গে বৈঠক করেছে মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়ার নেতৃত্বে বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মালিবাগে সিআইডি হেডকোয়ার্টারে চলে এ বৈঠক।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব মো. হেলাল উদ্দিন সিকদার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা ডলারের সংকট তৈরি করতেছে তারা কারা? তাদের চিহ্নিত করতে সিআইডি আমাদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। আমরা সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি। যারা অবৈধ ডলার ব্যবসা করে, যাদের আমরা চিনি তাদের একটা তালিকা করে দু-এক দিনের মধ্যে আমরা সিআইডির কাছে হস্তান্তর করব।’
এসব তথ্য বিচার বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে সিআইডি খুব শিগগিরই অবৈধ ডলার ও হুন্ডি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অপারেশনে নামবে। বৈঠকে এমন কথা হয়েছে উল্লেখ করে হেলাল উদ্দিন সিকদার বলেন, ‘অবৈধ মানি চেঞ্জারদের চিহ্নিত করে তাদের ধরার একটা বড় পরিকল্পনা করেছে এই তদন্ত সংস্থা। খুব শিগগিরই এসব অবৈধ ব্যবসায়ীকে তারা ধরবে।’
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান রহমান বলেন, ‘ডলারে অনেক সময় কারসাজি হয়, খোলা বাজারে বিক্রি হয়। এগুলো যেন বন্ধ হয় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটার সঙ্গে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার যেন না হয় সেগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব কার্যক্রম পরিচালনা করতে তাদের (মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন) কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’
গত সপ্তাহেই হুন্ডিতে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তাঁদের কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, চারটি মোবাইল সিমে পাওয়া গেছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। সংস্থাটির দাবি, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্তত ৫ হাজার এজেন্ট অবৈধভাবে বিদেশ থেকে অর্থ আনা ও বিদেশে অর্থ পাঠানোয় জড়িত। হুন্ডির এই চক্রের কারণে সরকার বছরে আনুমানিক ৭৫ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স বঞ্চিত হচ্ছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।