এফবিডি ডেস্ক॥
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)। প্রয়োজনে পড়লে বিইআরসিকে বাদ রেখে সব ধরনের জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারবে সরকার। এ সংক্রান্ত একটি খসড়া আইন নীতিগত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।
খসড়া আইনটি নাম বিইআরসি আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২২। আজই মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এটি উত্থাপনের কথা।
মন্ত্রিসভায় আইনটি অনুমোদন পেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিইআরসির কর্তৃত্ব কমবে। জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন মন্ত্রিসভার জন্য যে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছেন, একটি ধারায় বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে জ্বালানিমন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি অনুমোদন করেছেন।
সংসদ অধিবেশন না চলায় রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ দিয়ে সংশোধনটি জারি করা যেতে পারে বলে সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে।
বিইআরসি আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, বর্তমান আইনে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের ট্যারিফ/মূল্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিইয়ারসির পাশাপাশি সরকারেরও ক্ষমতা সংরক্ষণসংক্রান্ত বিধান সংযোজনের উদ্দেশ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে (সংলাপ-চ) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করতে পারেন।
বিআরসির চলমান আইনের মূল্যসংক্রান্ত অধ্যায়ের ধারা ৩৪ মোতাবেক সরকারের সঙ্গে আলোচনাক্রমে প্রণীত নীতিমালা ও পদ্ধতি অনুসরণে পাইকারি ও খুচরা বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ, ভোক্তাপর্যায়ে মূল্য বিইআরসি নির্ধারণ করে থাকে। এ আইনে আরও উল্লেখ রয়েছে, কমিশন লাইসেন্সি এবং অন্যান্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর শুনানির পর মূল্য নির্ধারণ করবে।
ইতোমধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ ট্যারিফ এবং বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ (খুচরা) ট্যারিফ সংক্রান্ত প্রবিধানমালা জারি হলেও পেট্রোলিয়ামজাত তথ্যাদির ট্যারিফ সংক্রান্ত কোনো প্রবিধানমালা জারি হয়নি। ফলে সরকার কর্তৃক প্রয়োজনের নিরিখে পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্যের ট্যারিফ মূল্য সমর্থন করা হয়ে থাকে। বর্ণিত প্রক্রিয়ায় মূল্য নির্ধারণে ন্যূনতম ৩ মাস সময় প্রয়োজন হয়।।
বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন। অর্থনীতির গতিকে চলমান রাখার সাথে নিয়মিত ও দ্রুততম সময়ে মূল্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিইআরসির পাশাপাশি সরকারেরও ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩ এর ধারা ৩৪ এর উপ-ধারা ৩ সংশোধন এবং ধারা ১ সন্নিবেশিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কিন্তু এই বিষয়ে বিইআরসির কেউ কথা বলতে সম্মত হয়নি।