এফবিডি ডেস্ক॥
ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ ঋণ পেয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা, যদিও তাদের সর্বোচ্চ ২১৫ কোটি টাকা ঋণ পাওয়ার কথা। গত কয়েক বছরে এই ব্যাংকটি ছাড়াও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের মালিকানায় এসেছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশসহ তিনটি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক শিল্প গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপকেও বিষয়টি সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এর আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউকে তদন্ত করে আগামী ৫ এপ্রিল প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেয়।
এ সময় আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদেশের পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় যে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। সেই প্রতিবেদনগুলো আমলে নিয়ে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছেন।’
ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন, সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউকে তদন্ত করে আগামী ৫ এপ্রিল প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘আদেশের সময় আদালত বলেছে, আমরা কোনো পক্ষ না। আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে মনে করছি, এটার সঠিকতা যাচাই করার জন্য অনুসন্ধান করা দরকার।’
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ ঋণ পেয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা, যদিও তাদের সর্বোচ্চ ২১৫ কোটি টাকা ঋণ পাওয়ার কথা।
গত কয়েক বছরে এই ব্যাংকটি ছাড়াও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের মালিকানায় এসেছে।
কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, খাদ্য, সিমেন্ট, ইস্পাত, পরিবহন, জাহাজ, আবাসন, ট্রেডিং, টেক্সটাইল, শিল্পপণ্য, গণমাধ্যমসহ নানা ব্যবসা আছে চট্টগ্রামকেন্দ্রিক এস আলম গ্রুপের।
এস আলম ছাড়াও উদার হস্তে ঋণ পেয়েছে নাবিল গ্রুপ নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান। ইসলামী ব্যাংক, এসআইবিএল ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক তাদেরকে পাইয়ে দিয়েছে ৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, যদিও এই গ্রুপের খুব বড় ব্যবসা আছে এমন নয়।
এমনকি ২৪ বছর বয়সী একজনকে ৯০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে কোম্পানি নিবন্ধনের এক মাসের মধ্যে। তার ব্যবসার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতাও ছিল না।
গত ৩০ নভেম্বর বিষয়টি নিয়ে আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবী। তখন আদালত তাকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় রিট করতে বলে।