এফবিডি ডেস্ক॥
‘ব্যাংক দুটির ঋণ নিয়ে সম্প্রতি অনেক আলোচনা হচ্ছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক দুটিকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, পর্যবেক্ষকরা তা তদারক করবেন।’
পর্যাপ্ত নথিপত্র এবং নিরাপত্তা জামানত ছাড়াই কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়ার ঘটনা সামনে আসার পর ইসলামি ঘরানার দুটি ব্যাংকে বসল পর্যবেক্ষক। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।
সোমবার ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক করা হয়েছে ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক আবুল কালামকে। আর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসানো হয়েছে পেমেন্ট সার্ভিস বিভাগের পরিচালক মোতাসিম বিল্লাহকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির মুখপাত্র মেজবাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক দুটির ঋণ নিয়ে সম্প্রতি অনেক আলোচনা হচ্ছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক দুটিকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, পর্যবেক্ষকরা তা তদারক করবেন।’
এর আগে ঋণ অনিয়ম ও জঙ্গি অর্থায়নের আশঙ্কায় ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক (তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক) পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা ব্যাংকটির বিভিন্ন সভায় অংশ নিতে শুরু করেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষক বসানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালর ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিরুল মওলা।
তিনি বলেন, ‘এটা খুবই ভালো একটা সিদ্ধান্ত। আগেও পর্যবেক্ষক দেয়া হয়েছিল। আমি মনে করি, এটা ভালো একটা সিদ্ধান্ত। ইসলামী ব্যাংকের অভিভাবক হিসেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালে ব্যাংকটির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসে। এরপর ২০২০ সালের মার্চে ওই পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মালিকানা বদলের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন বিবেচনায় পর্যবেক্ষক সরিয়ে নিয়েছিল, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।
কাগুজে কোম্পানির নামে যে প্রক্রিয়ায় ব্যাংকটি থেকে অর্থ সরিয়ে নেয়া হয়েছে, তা আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের আদলেই। ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক ঋণ অনিয়মের ঘটনা সোনালী ব্যাংকের হল-মার্ক, বেসিক ও ফারমার্স ব্যাংকের অনিয়মের মতোই এখন ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।
ইসলামী ব্যাংকের আদলে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকেও সম্প্রতি অর্থ বের করে নেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যাংকটিতেও পর্যবেক্ষক বসানো হয়েছে।