ডেস্ক রিপোর্ট॥
মিয়ানমারের সংঘাতময় রাখাইন রাজ্যে সরকারি সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে আবারো ভয়াবহ লড়াই শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় সংঘর্ষে নিপীড়িত এ জনগোষ্ঠীর বহু সদস্য হতাহত হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
সীমান্তের অদূরে হামলার ঘটনায় এ পাশের বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যও আতঙ্ক বিরাজ করছে। উদ্ভূত পরস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের আগমন ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার দিবাগত রাতে টেকনাফের ২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজিবি জানায়, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ সংঘাত চলমান থাকায় সীমান্তে কঠোর নিরাপত্তা বজায় রেখেছিল বাংলাদেশ। এবার সীমান্তের কাছাকাছি সংঘর্ষ চলছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমরা ২৪ ঘণ্টা সতর্ক আছি।
এদিকে, গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, সেটি আজকে হঠাৎ করে হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। আমাদের সীমান্তরক্ষীরা অনেক আগে থেকেই সেখানে সতর্ক রয়েছেন। রাখাইনে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
নতুন করে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সরকারের অনীহার বিষয়টি ইঙ্গিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, মানবতার কারণে রোহিঙ্গাদের তখন স্থান দিয়েছিলাম। যেসব রোহিঙ্গা আমাদের দেশে এসেছে, তাদের কারণে এখানে নিরাপত্তা ও পরিবেশগত সমস্যা তৈরি হয়েছে। শিবিরগুলো উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিস্তারের উর্বর ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এছাড়া সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো রোহিঙ্গা শিবির থেকে তাদের সদস্য নিয়োগ করার চেষ্টা করে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য আরকান এক্সপ্রেস নিউজ জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই আরাকানে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। গত বৃহস্পতিবার বুচিডংয়ের একটি রোহিঙ্গা গ্রামে ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। এতে তিনজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবারও বুচিডংয়ের দুটি বাড়ি বোমার আঘাতে ঝলসে গেছে। তবে কোন পক্ষ এ বোমা ফেলেছে, তা এখনো জানা যায়নি। হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছেন। এতে বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভেতরে ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত আট দিন ধরে বোমা হামলা, সাধারণ মানুষের বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ বিভিন্ন নৃসংসতা চালাচ্ছে জান্তা বাহিনী। তাদের এসব হামলায় ১৬ বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। জান্তার হামলায় অসংখ্য বাড়ি ও স্কুল ভবন ধ্বংস হয়েছে।