চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার ২৪ বছর পর মামলার চার্জশিটভুক্ত ১ নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে গুলশান পিং সিটির পাশে ১০৭ নং রোডের ২৫বি নম্বর ফিরোজা গার্ডেন বাড়ির এ-১ ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় র্যাব-১০ ও সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা। সেখান থেকে রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান ।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্বের চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আশিষ রায় এ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১নং আসামি ছিল। দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে পলাতক ছিল। তার অব¯’ান নিশ্চিত হওয়ার পর রাতে তার গুলশানের বাড়িটি ঘিরে রাখে র্যাব। পরে তল্লাশি চালিয়ে বাড়ির ভেতর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব হেফাজত নেয়া হয়। এ বিষয়ে আগামীকাল বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, সোহেল চৌধুরী হত্যায় গত ২০ মার্চ ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য দুই আসামি হলো- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান। উ”চ আদালতের আদেশে দীর্ঘদিন এ মামলার বিচার কাজ ¯’গিত ছিল। ২০১৫ সালে এই মামলার ¯’গিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। প্রত্যাহারের সেই আদেশসহ মামলার নথি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে আসে।
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী বিয়ে করেন ওই সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতিকে। বিয়ের কিছু দিন পর তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ওই সময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সোহেল চৌধুরী। জড়িয়ে পড়েন নেশার জগতে। সেই অন্ধকার জগতের অপরাধীদের সঙ্গে শুরু হয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বের রেশ ধরেই খুন হন সোহেল চৌধুরী। বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। তারা হলো- সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।