দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৯৫ জন্য কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে পরে ১৮ জনের পদোন্নতি বাতিল করা এবং আট জনকে ডাবল পদোন্নতি দেয়া নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়েছে বিএসইসি।
আট জনকে কীভাবে ডাবল পদোন্নতি দেয়া হলো, ১৮ জনের পদোন্নতি কীভাবে বাতিল করা হলো, মানবসম্পদ নীতিমালায় কী আছে এসব সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে লিখিত ব্যাখ্যায়।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে ডিএসইকে তলব করে। সেখানে এ নির্দেশনা দেয়া হয় বলে বিএসইসির বিশ্বস্ত সূত্র দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছে। বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে ডিএসই মৌখিকভাবে এসব অনিয়মের ব্যাখ্যা দিয়েছে। তবে বিএসইসি তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলেছে।
বৈঠকে ডিএসইর পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুর রহমান মজুমদারের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৭ নভেম্বর ১৮ কর্মকর্তার পদোন্নতি বাতিল সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে এ নিয়ে দেশের আর্থিকখাতে আলোচনার সৃষ্টি হয়।
এ সংবাদ বিএসইসি কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তারা ডিএসইকে গতকাল বৃহস্পতিবার তলব করে। সেখানে ১৮ কর্মকর্তার পদোন্নতি বাতিল এবং আট জনকে ডাবল পদোন্নতির ব্যাপারে সব ব্যাখ্যা চায় বিএসইসি।
পদোন্নতি হারানোর তালিকায় রয়েছেন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) থেকে জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) পদে পদোন্নতি পাওয়া তিনজন। সিনিয়র ম্যানেজার (এসএম) থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) পদে সাতজন, ম্যানেজার থেকে সিনিয়র ম্যানেজার পদে পাঁচজন এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ থেকে ডেপুটি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি পাওয়া তিনজন।
পদোন্নতি বাতিল করা জিএম পদবির কর্মকর্তারা হলেন সৈয়দ আল-আমিন রহমান, সাইদ মাহমুদ যোবায়ের ও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। এজিএম পদে যাদের পদোন্নতি বাতিল করা হয়েছে তারা হলেন- মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন রেজা, মো. বজলুর রহমান, কামরুন নাহার, মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ পাঠান, মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, সৈয়দ ফয়সাল আব্দুল্লাহ ও মোহাম্মদ আহসান হাবিব।
সিনিয়র ম্যানেজার পদে যাদের পদোন্নতি বাতিল করা হয়েছে তারা হলেন—ফারহানা শরিফা, সাদাত মারুফ হাসনায়েন, শরিফ গিয়াস উদ্দিন আলম, মো. মশিউর রহমান চৌধুরী ও মামুন-উর-রশিদ। ডেপুটি ম্যানেজার পদে যাদের পদোন্নতি বাতিল করা হয়েছে তারা হলেন- মো. আব্দুল লতিফ মিয়া, মো. সফিকুল আলম ও মো. দেলোয়ার হোসেন।
ডিএসইর কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজের উদ্দীপনা ফেরাতে একযোগে ৯৫ জন কর্মকর্তার পদোন্নতি দিয়েছিলেন সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন। কিন্তু এতে ক্ষিপ্ত হন পরিচালনা পর্ষদের অনেকে। অভিযোগ আছে, ডিএসইর সংক্ষুব্ধ পরিচালকরা তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। বিষয়টি মানতে না পেরে পদত্যাগ করেন তারিক আমিন।
পদত্যাগের পর তারিক আমিন ভূঁইয়া বিএসইসিতে পাঠানো এক চিঠিতে দাবি করেন, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন নীতিমালা মেনেই তিনি কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়েছিলেন। নীতিমালা মেনে কাজের সুযোগ পেলে তিনি আবার ফিরতে চান। কিন্তু তাকে সেই সুযোগ না দিয়ে অনেকটা তড়িঘড়ি করে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়।