অনলাইন ডেস্ক॥
গত কয়েকদিনের অতিভারী বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে ওঠার সঙ্গে অন্যান্য নদী পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এমন তথ্য জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি সমতল রংপুর জেলার কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে (ভারতে) অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (৯৮৯ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কমে এসেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিনে কমতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী সংলগ্ন চরাঞ্চল এবং কয়েকটি নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে তিস্তা নদীর পানি সমতল কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। আগামী তিন দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
রংপুর বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদী— আত্রাই, করতোয়া, পুনর্ভবা, ঘাঘট, ইছামতি-যমুনা ও যমুনেশ্বরী নদীর পানি সমতল বাড়ছে, অপরদিকে টাঙ্গন নদীর পানি সমতল কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগের এসব নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন নদীর পানি সমতল কমতে পারে।
এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদ এবং ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতল বাড়ছে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বাড়তে পারে এবং পরবর্তী তিন দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল ধীরগতিতে কমতে পারে, পরবর্তী এক দিন পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী তিন দিন বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হতে পারে।
রাজশাহী বিভাগের করতোয়া, আত্রাই, বাঙ্গালী ও ছোট যমুনা নদীর পানি সমতল বাড়ছে। অন্যদিকে মহানন্দা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের এসব নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পরবর্তী ১ দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী এক দিন নদীগুলোর পানি সমতল কমতে পারে।
এদিকে সিলেট বিভাগের সুরমা নদীর পানি সমতল বাড়ছে, অপরদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন নদীগুলোর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী এক দিন পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হতে পারে।
মনু, খোয়াই ও ধলাইয়ের পানি সমতল কমছে, অন্যদিকে ভুলাই, সারিগোয়াইন, সোমেশ্বরী ও কংসে পানি সমতল বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন এসব নদ-নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী এক দিন সমতল বাড় পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হতে পারে।
আবার চট্টগ্রাম বিভাগের সাঙ্গু ও গোমতী নদীর পানি সমতল কমছ, অপরদিকে মুহুরী, ফেনী, হালদা ও মাতামুহুরীর পানি সমতল স্থিতিশীল। এসব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন পানি সমতল স্থিতিশীলই থাকতে পারে।
পরবর্তী এক দিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, গোমতী ও ফেনী নদীর পানি সমতল বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হতে পারে। হালদা, মাতামুহুরী ও সাঙ্গুর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে।