আশরাফুল ইসলাম জয়॥
নানা দূর্ণীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন ইউপি সদস্যরা।
অভিযোগকারীরা জানান, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দূর্নীতি, ট্যাক্স, ভূমি উন্নয়নকর, ট্রেড লাইসেন্স এবং উপজেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত অর্থ আত্মসাতসহ নানাবিধ অনিয়মের সাথে জড়িত রয়েছেন চেয়ারম্যান সিদ্দিকী। তার ভাই স্থানীয় আ’লীগ নেতা সুলতান মাহমুদের খুঁটির জোরেই নাকি তিনি নানা দূর্ণীতি-অনিয়ম সত্ত্বেও টিকে রয়েছেন বহাল তবিয়তে, এমনই ভাষ্য এলাকাবাসীর।
রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে) ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন সদস্য কর্তৃক স্বাক্ষরিত অনাস্থাপত্র জমা দেওয়া হয় রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান অনাস্থাপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবটি পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অনাস্থাপত্র প্রদানের পর থেকে ৯ জন ইউপি সদস্যকে চেয়ারম্যান কর্তৃক হুমকি-ধামকি দেওয়ার কারণে তারা তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে বাড়ীঘর ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেকেই।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের একজন মেম্বার মোছাঃ হাসম তারা খাতুন বলেন, “আমরা খুব চাপে রয়েছি। সাংবাদিকদের সাথে কথা না বলার জন্য আমাদেরকে নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই আর কোন মন্তব্য করতে পারছিনা।”
অনাস্থাপত্রে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেন, তিন অর্থ বছরে ইউনিয়ন পরিষদ ট্যাক্স, ভূমি উন্নয়ন কর ও ট্রেড লাইসেন্স থেকে পাওয়া অর্থ এবং উপজেলা হইতে প্রাপ্ত ১ শতাংশ অর্থ কোন প্রকার উন্নয়নমূলক কাজ না করে তা আত্মসাৎ করে আসছেন চেয়ারম্যান আবু বক্কার সিদ্দিকী। উন্নয়ন তহবিল, কাবিখা, কাবিটা, টিআর, এডিপির প্রকল্পগুলো একক সিদ্ধান্তে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে কোনটা আংশিক কোনটা বাস্তবায়ন না করে অর্থ আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন মেরামতের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থও আত্নসাৎ করেছেন। বয়স্ক ভাতা, বিধবাভাতা ও মাতৃকালীন ভাতার ক্ষেত্রে কোন প্রকার রেজুলেশন ছাড়া নিজের পছন্দমতো ব্যক্তিগণের নাম সুপারিশ করে উপজেলা পাঠাচ্ছেন। ইউপি সদস্যদের কাছ থেকে তালিকা না নিয়ে ভিজিএফ কার্ডের তালিকা উপজেলা পাঠিয়েছেন। তিনি মিটিং না করে ভয়-ভীতিও হুমকি-ধামকি দিয়ে ইউপি সদস্যগণের রেজুলেশনে স্বাক্ষর নিয়ে আসছেন। তিনি একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বার্থে পরিষদ ভবনে পর্যাপ্ত কক্ষ থাকা সত্ত্বেও ইউপি সদস্যগণের জন্য কোন প্রকার বসার ব্যবস্থা রাখেন নাই। এমন দূর্নীতিগ্রস্থ ও স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তির সাথে জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সুযোগ না থাকায় অনাস্থা জ্ঞাপন করেনে ইউপি সদস্যরা।
অপরদিকে নলকা ইউনিয়ন পরিষদের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, “আমি নির্বাচিত হওয়ার পরে থেকেই বিভিন্ন মেম্বারদের সাথে আন্তরিকতার সহিত সকল কাজ পরামর্শ করে করছি। তাদের সাথে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। ইউনিয়ন পরিষদের সকল উন্নয়নের টাকা নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকে জমা রাখা আছে।”