রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ অপরাহ্ন

এনবিআরের আরেক সাবেক কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদের খোঁজ

  • আপডেট সময় সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪, ১২.১৬ এএম
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগ্রহীত

স্টাফ রিপোর্টার॥

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস বিভাগের সাবেক সহকারী কমিশনার মোখলেছুল রহমান ও তার পরিবারের ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় মোখলেছুর রহমানের পরিবারের তিন সদস্য এখন চার্জশিটভুক্ত আসামি।

এ বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ২৫ জুন কমিশনের পক্ষ থেকে কাস্টমস কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের ২ নভেম্বর দুদকের ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল।

মো. মোখলেছুর রহমান খান (সাহান) ২০১৬ সালের ৫ আগস্ট সহকারী কমিশনার হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, চাকরিকালে তিনি নিজ নামে ৫৪ লাখ ৯৮ হাজার ৪০৬ টাকার স্থাবর এবং ২ কোটি ৭৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬৭৫ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেন। তার মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ৮১ টাকা। তার পারিবারিক ব্যয় এক কোটি ৬৩ লাখ ৪২ হাজার ২৪৬ টাকাসহ মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ চার কোটি ৯৬ লাখ ২৯ হাজার ৩৩৩ টাকা। যার বিপরীতে মোট আয় পাওয়া যায় চার কোটি ৩০ লাখ ৮২ হাজার ২২০ টাকা। অর্থাৎ ৬৫ লাখ ৪৭ হাজার ১১৩ টাকা অবৈধ হিসাব হিসেবে প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এছাড়া তার স্ত্রী আসামি কান্তি রহমানের নামে ৩ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার ২০৫ টাকার স্থাবর এবং ৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৪৯ হাজার ২০৫ টাকার সম্পদের বিবরণ পায় দুদক। ঐ সম্পদের বিপরীতে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ৭১৮ টাকা। অর্থাৎ তিন কোটি ১১ লাখ ২৬ হাজার ৬৫৩ টাকা অবৈধ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে দুদকের তদন্তে। এসব সম্পদ তার স্বামী মো. মোকলেছুর রহমান খানের ঘুষ ও দুর্নীতির টাকা।

তৃতীয় আসামি ও মো. মোখলেছুর রহমান খানের বড় পুত্র মো. ফয়জুর রহমান খান বর্তমানে বিদেশে থাকলেও তার বিরুদ্ধে আইনি অপরাধ মিলেছে দুদকের তদন্তে। আয়ের উৎস হিসেবে তিনি ব্যবসা প্রদর্শন করলেও বাস্তবে তার কোনো ব্যবসা পাওয়া যায়নি। তবে গ্রামীণফোনে ৪০ হাজার টাকা বেতনের একটি চাকরি করতেন। চাকরিরত অবস্থায় ফয়জুর রহমান ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর গুলশান মডেল টাউন আবাসিক এলাকার সিডব্লিউএন (বি) ব্লকের ৩৬ নং রোডে জেনেটিক রিচমন্ড নামের একটি ভবনে কার পার্কিং স্পেসসহ ২১ লাখ ৩৮ হাজার ৮১৯  টাকায় ১৯৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। দালিলিক মূল্য ঐ টাকা হলেও বাস্তবে ফ্ল্যাটের মূল্য ছিল ২ থেকে ৩ কোটি।

এছাড়া তার নামে কিশোরগঞ্জে ৫০ শতক জমি ও ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৮০০ টাকা ব্যাংক ব্যালেন্সসহ অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে মোট ২৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬১৯ টাকার সম্পদ রয়েছে। যার বিপরীতে প্রমাণযোগ মোট আয় পাওয়া যায় ৪০ হাজার টাকা। এখানে ২৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনে তার পিতা মো. মোখলেছুর রহমান খান তাকে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং তিনি তার পিতার অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদকে বৈধ করার অপচেষ্টা করেছেন।

উল্লেখ্য, বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস বিভাগের সদস্য আলোচিত মতিউর রহমান ও কর বিভাগের প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2023 The Daily Sky
Theme Developed BY ThemesBazar.Com